বাড়িতেই বানানো যাক  লক্ষ্ণৌ স্পেশাল ‘গলৌটি কাবাব’

ঘরেই বানিয়ে ফেলা যাক লক্ষ্ণৌয়ের স্পেশাল ‘গলৌটি কাবাব’।

তবে ঐতিহ্যবাহী গলৌটি কাবাব তৈরি করা বেশ কঠিন। এক্ষেত্রে ধৈর্য্য এবং উপকরণ উভয়ই দুর্লভ।

গলৌটি কাবাব তৈরি করতে লাগবে

মটন কিমা- ১ কিলোগ্রাম

কিডনির চর্বি- ২০০ গ্রাম

ভাজা পেঁয়াজ বাটা- ১ চা চামচ

কাজু বাটা- দেড় টেবিল চামচ

ঘি- ২ টেবিল চামচ

নুন- স্বাদমতো

খোসা সহ কাঁচা পেঁপে বাটা- ২ টেবিল চামচ

গলৌট মশলা-১ টেবিল চামচ

কেওড়ার জল- ১ চা চামচ

গোলাপ জল- ১ চা চামচ

কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো- এক চিমটি

ঘি- সামান্য

দুধ- সামান্য

সাবেকি নিয়ম মেনে গলৌটি কাবাব রান্নায় কম করে ১৫০ ধরনের মশলার ব্যবহার হয়। গলৌটি কাবাবের মশলার পুটলিকে একসঙ্গে বলা হত লজ্জত-এ-তাম কিংবা লজ্জত-এ-তাউস। সমস্ত মশলা জোগাড় করা খুব কঠিন। আয়ুর্বেদিক দোকানে কিছু জিনিস পেতে পারেন। অবশ্য আজকাল অনলাইনে অনেক মশলাই পাওয়া যায়। আর রেডিমেড মশলা পেয়ে গেলে তো কোনও কথাই নেই!

 

স্পেশাল গলৌট মশলার জন্য প্রয়োজন পড়বে…

পান পাতার মূল- ১টি

খস-এর মূল- ২০ গ্রাম

পিপলি বা বড় গোলমরিচ- ১/৪ চা চামচ

কাবাব চিনি- ১/৪ চা চামচ

গোলমরিচ- ১ চা চামচ

শাহি জিরা- ১ চা চামচ

লবঙ্গ- ৪-৫টি

এলাচ- ৫-৬টি

স্টার অ্যানাইস- ১টি

তেজপাতা- ২টি

শুকনো গোলাপ ফুলের পাঁপড়ি- ১ টেবিল চামচ

স্টো ফ্লাওয়ার বা পাথরের ফুল- ১ টেবিল চামচ

জায়ফল- ১/৪ চা চামচ

জয়িত্রী- ১টি

বড় এলাচ- ১/২ চা চামচ

কেশর- ১ চিমটি

দারচিনি- ১ ইঞ্চ

সি ফোম- ১/২ ইঞ্চ

জংলি জাম- ১-২টি

 

এবার স্মোকিং-এর জন্য লাগবে আরও বেশ কিছু জিনিস। যেমন,

চারকোল- ২-৩টি

লবঙ্গ- ৩-৪টি

ঘি- ১ চা চামচ

 

প্রণালী

প্রথমে গলৌটি মশলা তৈরি করে নিন। মশলার সমস্ত উপকরণ রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর একটি তাওয়া গরম করে আঁচ বন্ধ করে দিন। উত্তপ্ত তাওয়ায় জায়ফল এবং গোলাপের পাঁপড়ি সেঁকে নিন। তারপর সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে মিহি করে বেটে গুঁড়ো করে নিন। এক কেজি মাংসের কিমায় এক চামচ মশলা গুঁড়ো লাগবে। বাকি মশলাটা তুলে রাখুন।

এবার কিমা এবং কিডনির চর্বি একসঙ্গে নিয়ে মিক্সিতে মিহি করে বেটে নিন। খেয়াল রাখবেন, কিমায় সামান্যতম হাড়ের টুকরোও যেন না থাকে। যতক্ষণ না মিশ্রণটি ফেটানো দইয়ের মতো মসৃণ হচ্ছে, ততক্ষণ বাটতে থাকুন।

এবার একটি থালায় কিমা বাটা নিন। তাতে আদা-রসুন বাটা, ভাজা পেঁয়াজ বাটা, খোসা সহ কাঁচা পেঁপে বাটা, কেওড়ার জল, গোলাপ জল, নুন এবং স্পেশাল গলৌটি মশলা দিয়ে হাত দিয়ে মাখতে থাকুন।

সমস্ত উপকরণ ঠিক ময়দা মাখার মতো করে মাখতে হবে। মাঝে মাঝে মিশ্রণটি মিহি  করে নিতে হবে।

এরপর কিমার মিশ্রণটি একেবারে ময়দার মতো একেবারে তুলতুলে মণ্ডে পরিণত করতে হবে।

এভাবে কম করে দুই ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রেখে দিতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি আগের দিন মিশ্রণটি বানিয়ে সারা রাত ফ্রিজে রেখে দেওয়া যায়।

এবার একটি ফ্রাইং প্যানে কিমার মিশ্রণ গোল করে রাখুন। মাঝখানে সামান্য ফাঁকা করে দিন। সেখনে একটি ছোটো স্টিলের বাটিতে চারকোল, লবঙ্গ এবং ঘি দিন।

এবার গ্যাসের আঁচ মিডিয়ামে রাখুন এবং কানা উঁচু ঢাকনি দিয়ে ঢেকে এভাবে এক ঘণ্টা রেখে দিন। এতে কিমা ভালো মতো সেট হয়ে যাবে এর এর মধ্যে স্মোকি একটা গন্ধও বের হবে।

এক ঘণ্টা পর কিমা সেট হয়ে গেলে চারকোলের পাত্র সরিয়ে নিন। কিমা নামিয়ে হালকা ঠান্ডা করে ফের হাত দিয়ে মেখে নিন।

চ্যাটালো পাত্র বা ফ্রাইং প্যান গরম তাতে ঘি গরম করুন। খুব বেশি ঘি দেবেন না। এতে কাবাবগুলি স্যালো ফ্রাই করতে হবে। তার জন্য কিমার মিশ্রণের গোল্লা পাকিয়ে গরম পাত্রে অল্প দূর থেকে ছুড়ে ছুড়ে দিন। কাছ থেকে দিলে ঘি ফুটে গায়ে লাগার সম্ভাবনা প্রবল।

অল্প আঁচে এক পিঠ ভাজা হয়ে গেলে কাবাবগুলি উল্টে দিন। উপরে হাতে করে প্রথমে দুধ এবং পরে ঘি-এর ছিঁটে দিন। যতক্ষণ না কাবাব সোনালি রং নিচ্ছে, ততক্ষণ তা দুই দিকে স্যালো ফ্রাই করে যেতে হবে।

এরপর পরোটা কিংবা রুমালি রুটি ছাড়া আর কিছু দিয়ে গলৌটি কাবাব কিন্তু ট্রাই করতে যাবেন না। করলে কাবাবের আসল মজাটাই হারিয়ে ফেলবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × three =