কলকাতা মেট্রোর অমানবিক মুখ দেখল কলকাতা

কলকাতার মেট্রোর আধিকারিকেরা যাই দাবি করুন না কেন, একাধিক অভিযোগ আসছে কলকাতা মেট্রো নিয়ে। তবে শনিবার সকালে যে ঘটনা ঘটল তা কিছুটা হলেও মন নাড়িয়ে দেওয়ার মতোই ঘটনা।মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে রেল কর্মী এবং আরপিএফের অমানবিক মুখ দেখলেন একাদশ শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রী। বাড়িতে একটা ফোন করার জন্য সাহায্য চাইলেও তার আর্তিতে কেউ সাড়া দেয়নি।শুধু তাই নয়, পরবর্তীকালে ওই ছাত্রীর মা আরপিএফে অভিযোগ জানাতে গেলেও তা নিতে অস্বীকার করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও ওই ছাত্রীর মা নিজের অভিযোগ জানানোর ব্যাপারে অনড় থাকায় রবীন্দ্র সদন স্টেশনের দায়িত্বে থাকা আরপিএফ অভিযোগ নেয়।

সূত্রে খবর, ওই ছাত্রী পূর্ব পুঁটিয়ারির বাসিন্দা। এদিকে শনিবার থেকে তার স্কুলে মিড টার্মের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। স্কুল রবীন্দ্রসদন মোড়ে।এদিন নেতাজি মেট্রো স্টেশন বা কুঁদঘাট মেট্রো স্টেশন থেকে প্রতিদিনের মতো এদিনও স্কুলের জন্য রওনা দেয় সে। এই সময় কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে আচমকাই থার্ড লাইনে ত্রুটি হয়। ফলে মেট্রো পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় আধ ঘণ্টা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকায় ওই ছাত্রী মেট্রো থেকে নেমে যায়। এদিকে স্কুলে পরীক্ষা শুরু হওয়ার সময় এগিয়ে আসায় অস্থির হয়ে পড়ে। কান্নাকাটিও করতে থাকে। কীভাবে স্কুলে পৌঁছবে তা বুঝে উঠতে না পেরে মেট্রো স্টেশনে দায়িত্বে থাকা এক আরপিএফ জওয়ান এবং কাউন্টারে থাকা একজন মেট্রো আধিকারিকের কাছে মোবাইল ফোন চায় মাকে বিষয়টি জানাতে।কিন্তু ওই ছাত্রীকে সাহায্য করা তো দূর-অস্ত এমনকী তাকে এদিকে ওদিকে যেতে বলে বিভ্রান্তও করে বলে অভিযোগ। এরপর মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে এসে বাসে বাদুড় ঝোলা ভিড় দেখে সে। মেট্রো স্টেশনের বাইরে বসেই কাঁদতে থাকে। পরে অটোয় অটোয় কোনওভাবে বাড়ি পৌঁছয়। ছাত্রীর মা স্কুলে বিষয়টি ফোন করে জানান। স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রীর আবেদনে সায় দিয়ে পরে পরীক্ষায় বসার সুযোগও দেয়। কিন্তু ঘটনার পর থেকে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে ওই ছাত্রী। তার কথায়, খাস কলকাতায় এমন অমানবিকতা, ভাবতে পারছে না সে।

এ প্রসঙ্গে কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান, ‘আমাদের কর্মীরা সবসময়ই সহযোগিতা করেন। মানুষ বিপাকে পড়লে আমরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছেও দিই। আজকের ঘটনাটা একটু আলাদা। আমাদের পরিষেবা ব্যাহত ছিল। টালিগঞ্জ স্টেশনে হাজার হাজার মানুষ দাঁড়িয়েছিল। সেখানে আমাদের কর্মীদের অনেক কিছুই সামাল দিতে হয়েছে। অনেকের কাছেই এই ঘটনার কথা শুনলাম। আমরা নিশ্চয়ই বিষয়টা দেখব।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − sixteen =