প্রভাবশালীদের বেশ বড়একটা অংশ থাকেন বিধাননগরে। এই তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি থেকে শুরু করে প্রাক্তন পুলিশকর্তা, প্রাক্তন আমলারা। আর সেখানেই পুরসভার কর্মীদের কাজ করতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। কারও বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা ভিতরে ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন তো কোনও বাড়ি থেকে ফোন করে দেওয়া হচ্ছে থানায়। ফলে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে বাড়ি-বাড়ি পুর অভিযান। আর এই সুযোগেই বিধাননগরজুড়ে ক্রমে বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ।
এদিকে স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ অগাস্ট পর্যন্ত এই পুর-এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫০৪ জন। সেখানে ১২ সেপ্টেম্বর বা মঙ্গলবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০৩৬ জন। এর মধ্যে ৩১৯ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে শেষ ৭ দিনে। যা থেকে স্পষ্ট, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ঝোড়ো ব্যাটিং করছে ডেঙ্গি। এই পরিস্থিতির জন্যে আমজনতার একাংশের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, গত বারের তুলনায় এ বছর বৃষ্টি কম। বেশির ভাগ দিনই হাল্কা বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে মশার লার্ভা ধুয়ে যাচ্ছে না। আবার বাড়ির ছাদে ফুলের টবে, ফ্রিজের ট্রে-তে জল জমিয়ে রাখার প্রবণতাও যাচ্ছে না অনেকের। বাড়ি গেলে পুর-স্বাস্থ্যকর্মীদের ঢুকতে পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না। আবার নিজেরাও বাড়ির ছাদ, সামনের অংশ পরিচ্ছন্ন রাখছেন না। ১০টি বাড়িতে ঢুকলে ৪টিতেই জমা জলে মশার লার্ভা মিলছে।
প্রাক্তন আমলাদের আচরণে অবাক চিকিৎসকদের একাংশও।তাঁদের বক্তব্য, ‘ডেঙ্গি রুখতে সবাইকেই সচেতন হতে হবে। সবার উচিত প্রশাসনকে সহযোগিতা করা। তা না করে পুরকর্মীদের বিড়ম্বনায় ফেলা সত্যিই অনভিপ্রেত।’
এদিকে প্রাক্তন আমলাদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর বক্তব্য, ‘বিধাননগরের মতো শহরে বাড়ি-বাড়ি অভিযানে গিয়ে পুরকর্মীদের পুলিশি ঝামেলায় পড়াটা দুঃখজনক। যতদূর জেনেছি, প্রাক্তন আমলাদের নিরাপত্তাকর্মীরাই বিড়ম্বনা তৈরি করছেন।’ কোনও বাড়ি থেকে ‘অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি এলাকায় ঘোরাঘুরি করছেন’ বলে ফোন গেলে পুলিশ যেন ভালোভাবে যাচাই করে ঘটনাস্থলে আসে সেই আর্জিও পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মার কাছে রেখেছেন পুরকর্তৃপক্ষ।