কোভিড ক্ষতিপূরণ মামলায় এজলাসে বসে কারও নাম না করে মামলার শুনানি চলাকালীনই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ‘কে একটা ভাইপো আছে তার বাড়ি চার তলা। কোটি টাকার বাড়ি। কোথা থেকে আসে এত টাকা?’ প্রত্যাশিত ভাবেই বিচারপতির এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে তৃণমূলের তরফে। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এরই প্রেক্ষিতে জানান, ‘উনি বিচারব্যবস্থার কলঙ্কের মতো আচরণ করছেন।’
শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে কোভিড মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলছিল। ২০২০ সালের ১ অগাস্ট কোভিডে মৃত্যু হয় উত্তর ২৪ পরগনার নালাবরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিভূতিকুমার সরকারের। স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর জায়গায় চাকরি না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন স্ত্রী। সেই মামলার শুনানিতেই এদিন নাম উল্লেখ না করে ‘ভাইপো’কে তির ছুড়লেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘এ রাজ্যে চোলাই মদ খেয়ে মারা গেলে দেওয়া হয় ২ লক্ষ টাকা। কোভিডে মৃত্যুতে কত? আদৌ টাকা দেওয়া হয়?’ এর পরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ‘ভাইপো’ প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ তৃণমূল। পালটা বিচারপতিকে তোপ দেগে শাসকদলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিচারব্যবস্থার কলঙ্কের মতো আচরণ করছেন। তিনি বিচারপতির আসনের অপব্যবহার করছেন। বিচারপতির সম্মান এবং পদের সুযোগ নিয়ে রাজনৈতিক মন্তব্য করছেন। তাঁর নিজের রাজনৈতিক উইশ লিস্ট, অবস্থান প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে।’ সরাসরি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে ‘কমরেড’ বলে সম্বোধন করে কুণালের চ্যালেঞ্জ, ‘মনে নেই কমরেড অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, আপনাদের জ্যোতিবাবু যখন ছিলেন, তখন চন্দন বসুকে নিয়ে কী কী কেলেঙ্কারি হয়েছিল। বেঙ্গল ল্যাম্প কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে চন্দন বসুর নামে যে যে কেলেঙ্কারি এসেছিল, লজ্জা করে না সেগুলি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন না। বিচারকের চেয়ারে বসে বিচারব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করে যে কাজ আপনি করছেন, সে কাজ করতে পারেন না। আপনার ক্ষমতা থাকলে ইস্তফা দিন, দিয়ে রাজনীতির ময়দানে আসুন।’
কুণালের অভিযোগ, শুক্রবারই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনওরকম প্রমাণ দিতে পারেনি ইডি। আর সেই কারণেই এদিনই অন্য একটি খবর তৈরির উদ্দেশে এই মন্তব্য করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।