দিল্লি কর্মসূচির দিন ফের অভিষেককে তলব ইডি-র, ডাকা হল বাবা-মাকেও

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের তলব করা হল তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুধুমাত্র অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নয়, তাঁর বাবা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় ও মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এবার তলব করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে। কারণ, এঁরা দুজনেই ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ড’স সংস্থার ডিরেক্টর পদে রয়েছেন। সেই কারণেই নিয়োগ মামলায় তাঁদের নাম উঠে আসে। প্রথমে ৩ অক্টোবর অভিষেককে তলব করেছে ইডি। এরপর আগামী ৬ অক্টোবর মা লতা ও ৭ অক্টোবর বাবা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয়েছে।

ঘটনাচক্রে এই ৩ অক্টোবর দিল্লিতে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের। আর সেই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেওয়ার কথা অভিষেকের। তাই ৩ অক্টোবর অভিষেক হাজিরা দেবেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। এদিন ইডির তরফ থেকে অভিষেক এই তলব পাওয়ার পরই তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হয়, দলীয় কর্মসূচির দিনটাকে বেছে নিয়ে ইডি আরও একবার প্রমাণ করে দিল যে বিজেপি অভিষেক- ফোবিয়ায় ভুগছে। প্রসঙ্গত, এর আগে যে দিন অভিষেককে তলব করা হয়েছিল, সে দিন ছিল ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয় কমিটির বৈঠক। দিল্লি যাওয়া বাতিল করে সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়েছিলেন অভিষেক। এদিকে ইডি সূত্রে খবর, আগামী ৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০ টায় সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে অভিষেককে। সেই নোটিসের কথা এক্স মাধ্যমে জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। সঙ্গে এও উল্লেখ করেন, ‘রাজ্যের প্রাপ্য টাকার দাবি জানিয়ে যে দিন দিল্লিতে কর্মসূচি রয়েছে, সেদিনই তলব করা হল। এতেই প্রমাণ হয় আসলে কারা ভয় পাচ্ছে।’ এখানে বলে রাখা শ্রেয়, চলতি মাসেই ইডি তলব করেছিল অভিষেককে। প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাঁকে। জিজ্ঞাসাবাদের পর বেরিয়ে অভিষেক দাবি করেছিলেন, পুরো ঘটনাই অন্তঃসারশূন্য। এদিকে তৃণমূলের অন্দর সূত্রে খবর, ওইদিন ইডি-র তলবে সাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, ২ ও ৩ অক্টোবর দিল্লিতে কর্মসূচি হওয়ার কথা তৃণমূলের। অভিষেকের নেতৃত্বে সেই কর্মসূচিতে যোগ দেবেন কয়েক হাজার কর্মী। তাই ওই কর্মসূচি ছেড়ে অভিষেক কলকাতায় হাজিরা দিতে আসবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে।

এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘যা করা উচিত, অভিষেক মাথা উঁচু করে সেই পদক্ষেপই করবেন।’ ইডি-র এই তলব প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, বিজেপি ভয় পাচ্ছে বলেই অভিষেকের বিরুদ্ধে এইসব পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সঙ্গে এও বলেন, ‘আরও একবার বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণতা প্রমাণ হল। বোঝা গেল বিজেপি অভিষেক-ফোবিয়ায় ভুগছে।’

উল্লেখ্য, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র গ্রেফতার হওয়ার পরই প্রশ্ন ওঠে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থা নিয়ে। সেই সূত্রেই অভিষেকের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। গত সোমবার সেই মামলা চলাকালীন ইডি অফিসারকে বিচারপতি সিনহা বলেছিলেন, লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার শীর্ষকর্তাদের সম্পর্কিত অনেক তথ্য় নেই রিপোর্টে। সাংসদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য না থাকাতেও ইডি-কে প্রশ্ন করেছিলেন বিচারপতি। এরপরই ফের তলব করা হল অভিষেককে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × four =