দিল্লি রওনা হওয়ার আগে সুর চড়ালেন অভিষেক

দিল্লি অভিযানে রওনা হওয়ার আগে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যেন আরও সুর চড়ালেন তৃণমূলের সেকেন্ড -ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০০ দিনের কাজ থেকে আবাসের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করতে দেখা গেল অভিষেককে। পাশাপাশি দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত বাঁকুড়ার তিন শিশুর পরিবারকে পাশে নিয়ে আবাসের টাকা বন্ধ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিও তোলেন তিনি। সঙ্গে দাবি তোলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং সহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও।

২ তারিখ ও তিন তারিখ দিল্লিতে ধরনা কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের। সেই উপলক্ষে রবিবার বিমানে দিল্লি রওনা হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়াতে এদিন বিমানে তাঁর সঙ্গে দিল্লি অভিযানে অংশ নিতে নিয়ে গেলেন দেয়াল চাপা পড়ে মৃত তিন শিশুর পরিবারের সদস্যদেরও। আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও টাকা না মেলায় পাকা করা যায়নি বাড়ি। এদিকে টানা বৃষ্টিতে সেই মাটির বাড়ি ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় তিন শিশুর। এই নিয়ে তুঙ্গে আবাস রাজনীতি। এই ঘটনাকে সামনে এনে বিজেপিকে বিদ্ধ করেছে তৃণমূল। এদিন বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে জানতে চান, ‘গায়ের জোরে বাংলার টাকা আটকে রেখেছে। বাংলাকে ভাতে মারতে চাইছে। এই যে দেওয়াল চাপা পড়ে যারা মারা গেলেন, এই প্রাণহানির দায় কে নেবে? তিনটি ফুলের মতো শিশু খেলতে গিয়ে মাটির কাঁচা দেওয়াল ভেঙেছে এর দার কার? যাদের জীবন এখনও শুরু হয়নি, তাদের প্রাণের মূল্য কে দেবে?’ সঙ্গে এও জানান, লাভপুরেও হয়েছে একই ঘটনা। এরই সূত্র ধরে তিনি দাবি করেন, এর তদন্ত হওয়া উচিত এবং বাংলার মানুষের রক্ত যাদের হাতে লেগে রয়েছে, তাদের গ্রেফতার করা উচিত। পাশাপাশি জোর করে নিয়ে যাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছিল সেই সব বিতর্কে জল ঢেলে অভিষেক এও জানান, ‘এরা মানসিকভাবে ঠিক না হওয়া সত্ত্বেও এক কাপড়ে যাচ্ছেন দিল্লিতে।’ এছাড়াও ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ সাফ জানালেন, মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি তৃণমূল কংগ্রেস করে না।

এখানেই শেষ নয়, তিনি বলেন,’বাংলার হকের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। ভোটে হেরে গিয়ে বাংলার মানুষের টাকা আটকে রেখেছে বিজেপি। আমরাও তো অনেক জায়গায় হেরেছি। সেখানে কি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ হয়েছে? আমরা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি কিন্তু তার জন্য মানুষকে কষ্ট দিই না। এই টাকা কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ২ বছরের ধরে জোর করে টাকা আটকে রেখেছে। এদিকে বলছে আমরা অভিযোগ পেয়েছি তাই টাকা দিচ্ছি না। আর এদিকে দু’দিন আগে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সাংবাদিক বৈঠকে বলছেন আন্দোলন করে কিছু হবে না। আমি একটা ফোন করলেই টাকা চলে আসবে। তাহলে ব্যাপারটা কী হচ্ছে। গিরিরাজ সিং কার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছেন সেটা জানতে হবে। এতদিন ধরে আবাসের টাকা আটকে। একটাও জনস্বার্থ মামলা হয়নি কেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে  অভিষেক জানতে চান, ‘দুর্নীতি হলে তো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত তা নেওয়া হয়নি কেন? যতদিন না টাকা বাংলার মানুষ পাবে, ততদিন এই লড়াই চলবে।’এরই পাশাপাশি আগামীদিনে আন্দোলনকে আরও জোরদার হবে এমনটাও ইঙ্গিত দেন তৃণমূল সাংসদ।

তবে এদিন দিল্লি রওনা হওয়ার আগে হুঁশিয়ারির সুরে জানান, ‘এত ভয় কিসের? বিমান বাতিল করে দিচ্ছে, এত ভয় কিসের যে আন্দোলনের অনুমতি দিচ্ছে না? দিল্লি পুলিশকে কাজে লাগাচ্ছে৷ আন্দোলন আটকানোর এত চেষ্টা করছে! এটা মানুষের লড়াই। ১০ হাজার নরেন্দ্র মোদিও আটকাতে পারবে না। ট্রেন বিমান বাতিল করে কি আমাদের আটকাতে পারলেন? আমাদের ধমকে চমকে আটকানো যাবে না।’ এদিন তৃণমূল সাংসদ এও স্পষ্ট ভাষায় জানান, ‘আমরা রাজনীতি করি না। যদি রাজনীতি করতাম তাহলে যেখানে হেরেছি সেখানে পরিষেবা বন্ধ করতাম।’

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 2 =