বিধানসভায় হাজির খাতায় সই নিয়ে অসন্তুষ্ট ফিরহাদ

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশের পরই শুক্রবার থেকেই শুরু হল বিধায়কদের হাজিরা খাতায় সই করার প্রক্রিয়া। এদিন পরিষদীয় মন্ত্রীর ঘরে হাজিরা খাতায় সই করতে দেখা যায় বিধায়কদের। শুধু সই করাই নয়, সইয়ের পাশে উল্লেখ করতে হয় বিধানসভায় ঢোকা ও বেরনোর সময়ও। তবে দলের সুপ্রিমোর এই নির্দেশ নিয়েই বিধায়কদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হতেও দেখা যায়।

শুক্রবার বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে মন্ত্রী তথা কলকাতা পোর্টের বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘দলের নির্দেশ, তাই সই করছি। আমি এর সঙ্গে সহমত নই।’ সঙ্গে এও বলেন, ‘পার্টি বলেছে, তাই সই করছি। কিন্তু আমরা স্কুলে পড়ি নাকি? যে সময় দিয়ে সই করতে হবে। এটার সঙ্গে আমি সহমত নই।’ আর এই সমগ্র ঘটনায় ফিরহাদের প্রতিক্রিয়া, ‘আমাদের নিজেদেরই দায়িত্ব নিয়ে সচেতন থাকা উচিত। বিধানসভায় আমরা সময়ে আসব।’ এদিন ফিরহাদের মতোই একই সুর শোনা যায় আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের গলাতেও। তিনিও জানান, ‘আমি তো নিয়মিত বিধানসভায় আসি। আজ পর্যন্ত ১১ বছরে একটা দিনও কামাই করিনি।’ তবে বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ‘টাইমে ঢুকেছি, টাইমেই বেরিয়েছি। ভালই লাগছে ব্যাপারটা।’

প্রসঙ্গত, বিধানসভায় একটি নতুন নিয়ম চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধায়করা বিধানসভায় কতক্ষণ থাকেন, তা নিয়ে হিসাব রাখতে শুরু করেছে পরিষদীয় দল। কিন্তু দলের এই নির্দেশে বিধায়কদের একাংশ সহমত নন। কারণ তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, এমন অনেক বিধায়ক রয়েছেন, যাঁদের নিত্য় গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি থাকে। এদিকে বৃহস্পতিবার বিধায়কদের উপস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পরই এই নিয়ম চালু হয়েছে শুক্রবার থেকে। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিধায়কদের উপস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘না জানিয়ে বিধানসভায় আসছেন না এটা ঠিক নয়। ওরা সবেতেই ভোট চায়। ওদের চিমটি কাটা স্বভাব। ওরা রাম চিমটি দিলে আপনি শ্যাম চিমটি দেবেন। কাজ করতে হবে। নিজেকে অহংকারী ভাববেন না।’ তৃণমূল সুপ্রিমোর এই বক্তব্যের পরই শুক্রবার বিধানসভা সেশনের প্রথম দিন থেকেই নতুন নিয়ম শুরু হয় তৃণমূল পরিষদীয় দলে।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, এর আগেও বিধায়কদের উপস্থিতি নিয়ে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সরব হয়েছিলেন মমতা। ভর্ৎসনাও করেন। কিছুদিন উপস্থিতি ঠিকঠাক চলে। তারপর আবার ফিরে এসেছে সেই ঢিলেঢালা ভাব। তবে এবার আরও কঠোর হতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রীতিমতো নজরদারি শুরু হল পরিষদীয় দলের তরফ থেকে যে কতক্ষণ বিধানসভায় কাটাচ্ছেন বিধায়ক, মন্ত্রীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − eleven =