রাস্তায় চাকরিপ্রার্থীদের অনশনের পাশাপাশি টেট নেওয়ার প্রস্তুতিতে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা

চাকরি নিয়ে লাগাতার আন্দোলনে সামিল হয়েছেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। বুধবার  থেকে শুরু হয়েছে এই আন্দোলন। চলছে অনশন। এরই মধ্যে একের পর এক চাকরিপ্রার্থীদের অসুস্থতার খবর এসে পৌঁছেছে। জানা গিয়েছে, ৭২ ঘণ্টায় ৮ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, যিনি অসুস্থ হয়েছেন তাঁর নাম সঞ্জয় মজুমদার। তিনি নদিয়ার বাসিন্দা। সারা রাত ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় খোলা আকাশের নীচেই বসেছিলেন সঞ্জয় সহ বাকি বিক্ষোভকারীরা। এরপর শনিবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন সঞ্জয়। নিকটবর্তী বিধাননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে চিকিৎসার জন্য।

এদিকে আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, অনশন কোনও ভাবেই প্রত্যাহার করবেন না তাঁরা। এদের সকলের দাবি, সরকারের তরফ থেকে সাড়া না মেলা পর্যন্ত অনশন জারি রাখবেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, আপডেটেড ভ্যাকেন্সি বা বর্ধিত শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে। এই দাবি নিয়ে ৫২৭ দিন ধরে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ করছেন তাঁরা। তবে কোনও সুরাহা না হওয়ায় এবার বিক্ষোভের স্থান পরিবর্তন করেছেন।

এদিকে ২০১৭ আর ২০২২ এর কোন নিয়োগ প্রক্রিয়াই এগানোর আগেই ১০ ডিসেম্বর ফের রাজ্যে প্রাইমারি টেট পরীক্ষা। এই ইস্যুতেই আলোচনা করতে ২৯ নভেম্বর বৈঠক ডাকল পর্ষদ। বেলা তিনটের সময়ে সব জেলার ডিপিএসসি চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠকে বসবে পর্ষদ।তবে এই ঘটনায় তৈরি হতে পারে জটিলতা, এমনটাই মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাজ্যে কলেজ স্ট্রিট থেকে ২০২২ সালের টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীরা আন্দোলন করলেন। কয়েকজন যতীন দাস পার্ক থেকে কালীঘাট পর্যন্ত যেতে গিয়ে গ্রেফতারও হয়েছিলেন। কয়েক জন আবার বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে। রাজ্যে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত। ২০১৭ সালে টেট হয়েছে, ২০২২ সালে টেট হয়েছে, কিন্তু একজনেরও চাকরি হয়নি। এদিকে আবার ২০১৭ ও ২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের কী হবে, তার কোনও সদুত্তর আপাতত নেই পর্ষদের কাছেও। কারণ কেবল ‘১৭ কিংবা ‘২২ সাল তো বটেই, তার আগেই ‘১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের ‘ব্যাক লগ’ নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ তাঁরাও অপেক্ষায় রয়েছেন। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে একাধিক মামলায় জর্জরিত পর্ষদ। কাউন্সিলিং করে তাঁদের নিয়োগের তারিখ দিতে হবে। শিক্ষাবিদরাই জানাচ্ছেন, এটা একটা দীর্ঘায়িত প্রক্রিয়া। আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, পুরনো প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করেই কেন আবার পরবর্তী নিয়োগের পরীক্ষা তা নিয়েও। এই ব্যাপারে পর্ষদের বক্তব্য, যেহেতু কেন্দ্রের আইনে প্রত্যেক বছর টেট নেওয়ার কথা বলা রয়েছে, তারা সেই মতোই চলছে। কিন্তু পাশ করেও চাকরির মুখ দেখেননি, তাঁরা কী করবেন, প্রশ্ন তো থাকছেই। প্রসঙ্গত, এবার  প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য আবেদনের খরচও বেড়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − fifteen =