নিউটাউনে ফ্ল্য়াট বিক্রির নামে আর্থিক প্রতারণা

নিউটাউনে ফ্ল্যাট তৈরির নামে একাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠল এক প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম সঞ্জিত কাশ্যপ। এদিকে টাকা ফেরতের পাশাপাশি ধৃত প্রোমোটারের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন প্রতারিতরা।

ঘটনার সূত্রপাত আনন্দপুরের বাসিন্দা, বেসরকারি সংস্থার কর্মী সামন্তক রায়ের ফ্ল্যাট কেনাকে ঘিরে। ২০১৭-র মার্চে তিনি শপিং মলে গিয়েছিলেন কেনাকাটা করতে। সেখানেই একটি লিফলেট থেকে নিউ টাউনে কম দামে একটি আবাসন তৈরির কথা জানতে পারেন। ওই লিফলেটের সূত্র ধরেই সল্টলেক সেক্টর ফাইভে ওই সংস্থার অফিসে যান তিনি। সেখান থেকে গাড়ি করে নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া-৩ তে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। দেখানো হয়, সাপুরজরির পাশে একটি জমিতে শুরু হয়েছে ফ্ল্যাট তৈরির কাজ। জায়গাটি পছন্দও হয়ে যায় সামন্তকের। তখনই তাঁকে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২০-তে ফ্ল্যাট তৈরি হয়ে যাবে। ফ্ল্যাট হাতে পাওয়ার আগে পুরো টাকা দিতে হবে না। শুধু বুকিংয়ের জন্য কিছু টাকা দিলেই হবে। যা শুনেই বুকিং বাবদ ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা দেন তিনি।

এদিকে ২০২০-তে একাধিক ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেও লোন না মেলায় খোঁজখবর শুরু করেন সামন্তক। তখনই জানতে পারেন, একতলার বেশি আর ওই ফ্ল্যাটের কাজ এগোয়নি। এরপর টাকা ফেরত চান তিনি। তবে, যে চেক তাঁকে দেওয়া হয়, তা বাউন্স করে। এরপরেই ওই বিল্ডিংয়ে যারা যারা ফ্ল্যাট কিনেছেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সামন্তক। তাঁর বক্তব্য, সবমিলিয় প্রায় ৭ জনের সঙ্গে একই কায়দায় প্রতারণা করছেন সঞ্জিত। এরপরেই বিধাননগর ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। শুধু সামন্তকই একা নন, নিউটাউনে ফ্ল্যাট কিনতে প্রতারণার শিকার হয়েছেন আরও অনেকেই।

তবে এই ঘটনা সামনে আসার পর নিউটাউন কলকাতা উন্নয়ন পর্ষদের কর্তাদের পরামর্শ, ফ্ল্যাট কেনার আগে তার অনুমোদন রয়েছে কি না, ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রমোটারের চুক্তি হয়েছে কি না তা খোঁজ করে দেখাটা বাধ্যতামূলক। না হলেই প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষ এ প্রসঙ্গে জানান, ‘ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হলে অবশ্যই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করুন। কারণ, অভিযোগ দায়ের না হলে আরও অনেকের সঙ্গেই একই ঘটনা ঘটবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + two =