নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এবার জামিন পেলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। শর্তসাপেক্ষে তাঁকে জামিন দিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ। গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা থেকে এ দিন জামিন মিলেছে কল্যাণময়ের। তবে নবম-দশমের নিয়োগ সংক্রান্ত অপর একটি দুর্নীতি মামলায় এই কল্যাণময়কে হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন করেছিল সিবিআই।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের শর্ত অনুযায়ী, তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত এলাকায় থাকতে হবে তাঁকে। বিধাননগর কমিশনারেট এবং পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি। পাসপোর্ট থাকলে তা নিম্ন আদালতে জমা দিতে হবে।
এর আগে মিডলম্যান হিসেবে গ্রেফতার হওয়া প্রসন্ন রায় জামিন পেয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন তিনি। আর কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে জামিন দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বস্তুত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রীর জামিন পাওয়ার পর কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের জামিন পাওয়া নিঃসন্দেহে বড় বিষয়। কারণ, এই দুর্নীতিতে সরাসরি তাঁর নাম বারংবার উঠে আসছিল। তবে জামিনের রয়েছে কিছু শর্ত। যেমন, প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতিকে অবশ্যই তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। এছাড়া, কলকাতা পুরসভা এলাকায় থাকতে হবে তাঁকে। বিধাননগর কমিশনারেট এবং পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এছাড়া, পাসপোর্ট থাকলে তা নিম্ন আদালতে জমা করতে হবে।
সূত্রের খবর, আদালতে কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও তথ্য পেশ করতে পারেনি সিবিআই। সেই যুক্তিতে সওয়াল করাতেই ডিভিশন বেঞ্চ জামিন মেলে এ দিন। ফলত, আবারও ইডি এবং সিবিআই-এর তদন্ত নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন উঠেছে। প্রসঙ্গত, এই নিয়ে নিয়োগ মামলায় পাঁচজন অভিযুক্ত জামিন পেয়েছেন। এখনও যে সকল অভিযুক্ত রয়েছেন তাঁরাও এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে জামিনে ছাড়া পেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে সভাপতির দায়িত্ব পান কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। প্রায় ১০ বছর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। গত বছর তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ফলে তাঁর জায়গায় নতুন কাউকে আনা হবে, না কি তাঁকেই ফের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। তারই মাঝে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর নাম জড়ায়। এরপরই গত ১৬ সেপ্টেম্বর এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। নিজাম প্যালেসে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বাগ কমিটির রিপোর্টে নাম ছিল কল্যাণময়ের। তাঁর বিরুদ্ধে মূলত অভিযোগ, নিয়োগপত্রে সই করে তা প্রাক্তন উপদেষ্টা কমিটির সদস্য এসপি সিনহা অর্থাৎ শান্তিপ্রসাদ সিনহার কাছে পৌঁছে দিতেন। সেইসব বিষয় নিয়ে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করে বলে সূত্রের খবর। এরপরই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। গ্রেফতারির প্রায় এক বছরের বেশি সময় পর জামিন পেলেন তিনি।