পলিসি চালুর নামে প্রতারণার নয়া ছক সাইবার প্রতারকদের

‘দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ পড়ে থাকা পলিসি কম টাকায় চালু করতে চান? তা হলে আমাদের বলুন-ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তর আপনাদের স্বার্থে এই ধরনের পরিষেবা চালু করেছে’। ফোনে এমন বার্তা অহরহই আসছে অনেকের কাছেই। আর এমন আশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে ওই ব্যক্তিকে সরকারি কর্মী ভেবে তাঁর দেওয়া অ্যাকাউন্ট নম্বরে বড় অঙ্কের টাকও টাকা পাঠিয়ে দেন  অনেকেই। এর বড় উদাহরণ ব্যারাকপুরের সমীর চক্রবর্তী। বিমা চালু হওয়ার নামে ফোনালাপের পর তিনি দিয়েছিলেন ১৫ হাজার টাকা। তবে বিমা চালু হওয়ার কোনও এসএমএস তাঁর ফোনে আসেনি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এটা আসলে প্রতারণা-চক্রের কাজ।

একই ঘটনা ঘটেছে সল্টলেকের এক ব্যক্তিকে জানানো হয়, মাত্র ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ক্যাশলেস স্বাস্থ্যবিমা দপ্তরের তরফে করা হচ্ছে। কোনও দিক খতিয়ে না দেখে ওই ব্যক্তিকে বিশ্বাস করে টাকা দিয়ে বসেন তিনি। এখানেও কাহিনীটা সেই একই। টাকা পাঠালেও কোনও কাগজ তাঁর কাছে আসেনি।

সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে এ ভাবেই ক্রেতাসুরক্ষা ও উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরকে সামনে রেখে টাকা রোজগার করতে শুরু করেছে সাইবার প্রতারকরা। বিষয়টি নজরে এসেছে ক্রেতাসুরক্ষা ও উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের। সরকারি সূত্রে খবর, গত এক মাসে দপ্তরের নাম করে রাজ্যের ৫৪ জন মানুষকে বোকা বানিয়েছে সাইবার প্রতারকরা। তত্য বলছে গত দু মাসে এমন ঘটনা ঘটেছে ৮৯ টি।

এই ঘটনা সামনে আসার পরই ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে আমজনতার কাছে আর্জি রাখা হয়েছে, উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের নামে কোনও ব্যক্তি ফোন করে বাড়িতে বয়স্ক মানুষ আছেন কিনা, কিংবা বন্ধ হয়ে যাওয়া জীবনবিমা রয়েছে কি না তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। আপনাকে সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়ে টাকা বা অন্যান্য তথ্য কি পেতে চাইছে? জেনে রাখুন, এটা কোনও প্রতারণা-চক্রের কাজ।

এই প্রসঙ্গে ক্রেতাসুরক্ষা ও উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের বক্তব্য, ‘লাগাতার প্রচারের ফলে অনেকেই এখন সাইবার প্রতারকদের অপরাধের ধরন জেনে গিয়েছেন। সে কারণেই সরকারি সংস্থার নাম করে মানুষকে বোকা বানানোর কারবার শুরু করেছে প্রতারকরা। এই সংক্রান্ত অভিযোগ এলেই পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × two =