মিগজাউমের প্রভাব পড়বে না বংলায়

ঘূর্ণিঝড় মিগজ়াউম নিয়ে এখন মাথাব্যথা বাঙালির। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর,  নিম্নচাপটি শনিবার দুপুরে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ৪৫০ কিলোমিটার চেন্নাই থেকে এবং ৬৭০ কিলোমিটার মাছলি পাটনাম থেকে দূরে অবস্থান করছে। এরপর এই সিস্টেমটি এগোবে পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিকে। এরপর আগামী ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ রবিবার এটি ঘূর্ণিঝড়ে ঝড়ে পরিণত হবে। তারপর মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপরে আসবে এই সিস্টেমটি। তামিলনাড়ু এবং অন্ধ উপকূলের কাছে আসবে আগামী ৪ তারিখে। এরপর আগামী পাঁচ তারিখ সকালে দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে নীল্লর আর মাছলি পাটনাম এর মাঝে ল্যান্ডফল হওয়ার সম্ভাবনা।এই সময় এর গতিবেগ থাকতে পারে ১০০ কিমি। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ওডিশার মধ্যে কোনও জায়গায় ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হতে পারে।এখনও নির্দিষ্ট কোনও জায়গা চিহ্নিত করা যায়নি। সেই কারণেই ওড়িশার উপকূলবর্তী সব জেলাতেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি প্রভাব বাংলায় পড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে এর ফলে উত্তর ও উত্তর পূর্ব ও পূর্ব দিক থেকে আসবে বাতাস। সঙ্গে নিয়ে আসবে জলীয় বাষ্প। এতে মেঘের পরিমাণ অনেকটাই বাড়বে। এর জেরে তাপমাত্রা আরও এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ার সম্ভাবনার কথাও জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ফলে ন্যূনতম তাপমাত্রা তিন থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকবে। সিস্টেমটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর ৯ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে তাপমাত্রা আবার কমতে শুরু করবে। তবে ৮ তারিখ পর্যন্ত তাপমাত্রার কোনও পরিবর্তন নেই। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর,  আগামী ৬ এবং ৭ ডিসেম্বর দক্ষিণবঙ্গের উপকূলের জেলা দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, হুগলি, কলকাতায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। ৯ তারিখ থেকে আবার আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে। সঙ্গে তাপমাত্রাও কমতে শুরু করবে। এই সিস্টেমের জন্য কোনও সতর্কবার্তা নেই বাংলার জন্য।

পাশাপাশি আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে এও জানানো হয়েছে, এ বছর শীত পড়া নিয়ে বেশি উৎসাহিত হয়ে আবেগে না ভেসে যাওয়াই ভালো। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসের আবহাওয়ার যে পূর্বাভাস প্রকাশ করেছে মৌসম ভবন, তাতে বলা হয়েছে, এবার শীতে গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশিই থাকবে। প্রশান্ত মহাসাগরের সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেশি থাকার জন্য, অর্থাৎ এল নিনো পরিস্থিতির জন্যই এমনটা হতে চলেছে বলে মনে করছেন আবহবিদরা।

মাত্র একদিন আগে ২২ বছরের মধ্যে উষ্ণতম নভেম্বর কাটিয়েছে কলকাতা। নভেম্বরের মাঝামাঝি দক্ষিণবঙ্গে শীতের যতটুকু আমেজ পড়তে শুরু করেছিল, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার পর তা উধাও। ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউমে’র রেশ কেটে গেলে এবং সমুদ্র শান্ত হলেও যে পরিস্থিতির বদল হবে, তেমন সম্ভাবনা দেখছেন না আবহবিদরা। আবহাওয়া দপ্তরের রেকর্ড বলছে, ডিসেম্বরে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার রাতের তাপমাত্রা থাকে গড়ে ১৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে গড়ে ২৬.৭ ডিগ্রি। কিন্তু এবার রাত ও দিন-দু’সময়েই তাপমাত্রাই গড়ের কিছুটা উপরে থাকবে।শুধু কলকাতা বা বাংলা বলে নয়, এমন পরিস্থিতি থাকবে গোটা দেশেই। আবহবিদরা অবশ্য বলছেন, এবার শীতের তিন মাসের তাপমাত্রা স্বাভাবিক গড়ের চেয়ে বেশি থাকবে, এই পূর্বাভাসের অর্থ কিন্তু ঠাণ্ডা পড়বে না এমন নয়। তবে ঠাণ্ডার তীব্রতা কম থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − one =