রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম-এর উপর যে ভরসা নেই তা এবার আদালতে স্পষ্ট জানাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। প্রসঙ্গত, বর্তমানে ইডি হেফাজতে থাকা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ও বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিকিৎসা চলছে এসএসকেএম-এ। সেখানে সর্বক্ষণ সিসিটিভি নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা করেছে ইডি। সেই নজরদারিতে আপত্তি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন জ্যোতিপ্রিয়। কারণ, তাঁর দাবি, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না তিনি। তাঁর উপর নজরদারি শিথিল করার আবেদন জানিয়েই আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। তারই শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার।
এদিকে জেলবন্দি থাকাকালীন জ্যোতিপ্রিয়কে তড়িঘড়ি ভর্তি করা হয় এসএসকেএম-এ। এরপর নিম্ন আদালতের নির্দেশ মেনে, সর্বক্ষণ সিসিটিভি নজরদারি চলছে জ্যোতিপ্রিয়র কেবিনের বাইরে। নিম্ন আদালতের এই নির্দেশের বিরোধিতা করেই হাইকোর্টে মামলা করেন মন্ত্রী। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে, আদালতে ইডি-র আইনজীবী জানান, ‘এসএসকেএম-কে বিশ্বাস করি না।’ মেডিক্যাল রিপোর্টও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ জানায় ইডি। এদিকে এদিন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ ইডি-র কাছে জানতে চান, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকলে কি সিসিটিভি প্রয়োজন তা নিয়ে জানতে চান বিচারপতি। সঙ্গে এও জানতে চান, সিআরপিএফ-কে ইডি বিশ্বাস করে কি না তা নিয়েও। একইসঙ্গে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, ‘প্রয়োজনীয় সিআইএসএফ জওয়ান সংখ্যা বলুক ইডি, আদালত তাই মোতায়েন করতে চায় এসএসকেএমে জ্যোতিপ্রিয়র নজরদারিতে।’ এদিকে আদালত সূত্রে খবর, শুক্রবার এ বিষয়ে হাইকোর্টে জানাবে ইডি। এদিকে কেন্দ্রীয় সংস্থার প্রশ্ন, গ্রেফতার হওয়ার পর কী প্রাইভেসি থাকতে পারে?
এরই রেশ ধরে সিসিটিভি-র বিকল্প হিসেবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যায় কি না, তা দেখতে বলেন বিচারপতি। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি এদিন এও জানান, রেজিস্ট্রার থাকবে। সবাইকে দেখা করতে দেবেন না। কারা দেখা করছেন সেটা রেজিস্ট্রারে থাকবে। এই প্রসঙ্গে জ্যোতিপ্রয়র আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় এও জানান, যাঁরা অসুস্থ তাঁদের জন্য জেলের নিজস্ব আইন আছে। কারা দেখা করতে পারবেন সেখানে বলা আছে। সেটা এখানেও মানা হোক।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই রেশন দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট পেশ করেছে ইডি, যাতে জ্যোতিপ্রিয়র বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ রয়েছে। বলে রাখা ভাল, কয়েক সপ্তাহ আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। পরে রক্তচাপ অনেকটা কমে যাওয়ায় আইসিইউ-তে স্থানান্তর করা হয় তাঁকে। তারপর থেকে এসএসকেএমেই রয়েছেন তিনি। কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে অভিযুক্ত মন্ত্রীর জন্য। তাঁর কেবিনের বাইরে বসানো হয়েছে সিসিটিভি। ফলে মন্ত্রীর সঙ্গে কারা দেখা করতে যাচ্ছেন, তার ওপরে নজর থাকছে ইডি-র।