রিপোর্টে অসন্তুষ্ট আদালত, ২০ ডিসেম্বর ফের রিপোর্ট তলব

ফের একবার ডিভিশন বেঞ্চের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল এসএসসি। কমিশনের উত্তর মোটেই সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করলেন হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশ বসাক। কমিশন যে তথ্য আদালতে পেশ করছে, তা যথেষ্ট নয় বলেই উল্লেখ করেছে আদালত। সোমবার নবম-দশমে নিয়োগের সুপারিশ পত্র প্রত্যাহার নিয়ে বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে নিজেদের অবস্থান জানায় স্কুল সার্ভিস কমিশন। এরপরই স্কুল সার্ভিস কমিশনের দেওয়া তৃতীয় রিপোর্ট দেখে ফের ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে ফের রিপোর্ট তলব করল ডিভিশন বেঞ্চ। সোমবারের রিপোর্ট দেখে বিচারপতিদের বক্তব্য, এতে অনেক অসামঞ্জস্য রয়েছে। আর চাকরি বাতিল নিয়ে নিজেদের অবস্থান এখনও স্পষ্ট করতে পারেনি স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাই তাদের আরেকবার সুযোগ দেওয়া হল।

সঙ্গে এসএসসি-র প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে এদিন বিচারপতি দেবাংশু বসাক এও বলেন, ‘প্রথম দিন থেকে আমরা জানতে চাইছি যে এসএসসি-র মাধ্যমে সুপারিশ পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভুল হয়ে থাকলে, সেটা কি আপনারা খুঁজে পেয়েছেন কিনা? খুঁজে পেয়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে কী করেছেন?” উত্তরে কমিশন বলে, ‘আমরা অনেক অনিয়ম খুঁজে পেয়েছি। সেগুলো আদালতের সামনে পেশ করেছি। তারপর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছি।’

প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা এখন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বিশেষ বেঞ্চ। এদিন বিচারপতি বসাক ও বিচারপতি শব্বর রসিদির বেঞ্চে রিপোর্ট জমা দেন এসএসসি-র প্রতিনিধিরা। কিন্তু তা দেখে আদালতের তরফ থেকে এদিন প্রশ্ন করা হয়, সুপ্রিম কোর্টের  স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও কীসের ভিত্তিতে নবম-দশম শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের সুপারিশপত্র বাতিল করা হয়েছে, তা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছিল আদালত এদিনের রিপোর্টেও তা স্পষ্ট নেই বলে জানান বিচারপতিরা। এরই রেশ ধরে বিচারপতি সরাসরি ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘কমিশন কেন সব তথ্য আদালতের সামনে নিয়ে আসতে লজ্জা পাচ্ছে? গত প্রায় ১ মাস ধরে আমরা স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছ থেকে সাহায্য চাইছি। কিন্তু আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে আপনারা কিছু লুকোতে চাইছেন।’

এখানে বলে রাখা শ্রেয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গ্ৰুপ-সি, গ্ৰুপ-ডি, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত মামলার শুনানি চলছে হাই কোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে। এর আগে দুর্নীতির অভিযোগে এই মামলায় বহু শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল হয় আদালতের নির্দেশে। তাঁদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ছিল। কিন্তু সেই বাতিলের উপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা স্থগিত হয়ে গেলেও কীসের ভিত্তিতে এসএসসি চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল করেছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতিরা। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এসএসসি-র কাছে জানতে চান, নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছিল? এর আগে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল, সেই হলফনামায় তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা ছিল না। কিন্তু সোমবার এসএসসি-র নতুন রিপোর্টেও সন্তুষ্ট হল না হাইকোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 2 =