নির্বিঘ্নে শেষ হল টেট, বিজ্ঞপ্তি বের হলেই শুরু নিয়োগ জানাল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ

মোটের উপর নির্বিঘ্নেই শেষ হল টেট৷ কোথাও কোথাও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ থাকলেও তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু এখনই জানানো হয়নি না পর্ষদের পক্ষ থেকে৷ শুধু জানানো হয়, ‘এটা হওয়ার কথা নয়, তবু আমরা দেখছি, তদন্ত করব৷’ পাশাপাশি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার সাংবাদিক বৈঠকে আশ্বাসের সুরে জানান, ‘যখন বিজ্ঞপ্তি হবে তখন আমরা নিয়োগ করব৷ সরকার শূন্যপদ দিলেই আমরা নিয়োগ শুরু করব৷’

এদিনের টেট সম্পর্কে ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার জানান, এদিনের টেটে  মোট আবেদন করেছিলেন ৩ লক্ষ ৯ হাজার ৫৪ জন পরীক্ষার্থী, এর মধ্যে ২ লক্ষ ৭২ হাজার ৬৩৯ জন পরীক্ষা দিয়েছেন। অর্থাৎ ৮৮.২২ শতাংশ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছেন। উত্তর দিনাজপুর জেলায় সব থেকে বেশি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তবে পরীক্ষার দিন প্রশ্নপত্র ভাইরাল হওয়া নিয়ে একাধিক বিষয় উঠে এসেছে৷ তিনি এই বিষয়ে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে প্রশ্নপত্র নিয়ে সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল হওয়ার কোনও অভিযোগ আসেনি। কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। আমরা আপনাদের থেকে শুনলাম, ১টার পর প্রশ্নপত্রের কিছু অংশ সোশ্যাল মিডিয়াতে এসেছে। বোর্ডকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে এসবের মাধ্যমে। তবে এইটুকুই বলতে পারি, আমরা ব্যবস্থা নেব। অভিযোগ তো অবশ্যই দেব। যা যা করার করব, এই নিয়ে তদন্ত করা হবে৷’ এদিকে টেট চলাকালীন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি প্রশ্ন পত্র। যা নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়। কারণ, ভাইরাল হওয়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিল রয়েছে মূল প্রশ্নপত্রের, এমনটাই দাবি পরীক্ষার্থীদের একাংশের। আর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু রাজনৈতিক কচকচানি। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ একদিকে যেমন ঘটনার দায় ঠেলেছেন সিপিএম-বিজেপি-র দিকে। তেমনই আবার আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য আবার তৃণমূলকে দুর্নীতি কাঁটায় বিদ্ধ করেছেন। অপরদিকে, পর্ষদ সভাপতি আবার বিষয়টি জানেন না বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায়।

এরপর সভাপতি গৌতম পাল জানান, ‘এটাকে প্রশ্নপত্র লিক বলে না। কারণ যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন পত্র ছড়িয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে সেই সময় পরীক্ষার্থীরা হলের ভিতরে। ৮০০ কাছাকাছি সেন্টার। আমরা চেষ্টা করেছি যথাসাধ্য মোবাইল রেখে যাতে চাকরি প্রার্থীরা পরীক্ষা দিতে পৌঁছন।আমার মনে হয় পর্ষদকে কলুষিত করতে ইচ্ছাকৃত এটা করেছে। তবে এটাকে প্রশ্ন লিক বলে না।’

এদিকে, আবার  তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, ‘এগুলো ভয় তৈরি করার জন্য করা হয়। বহু জায়গায় এমন কোনও ব্যক্তি রয়েছেন যারা কেউ সিপিএম বা বিজেপি সমর্থক, তারা এই কাজ করতেই পারেন। প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে বাইরে তা পোস্ট করে দিলেন।অর্ন্তঘাতের জন্য এই কাজ করতেই পারেন। কিন্তু আসল বিষয় হল যে সময় এই ঘটনা ঘটেছে সেই সময় পরীক্ষার্থীরা হলের ভিতরেই ছিলেন। ফলে যারা হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে এই সব চাঞ্চল্যকর, বিস্ফোরক বলে বিশেষণ আদায়ের চেষ্টা করছেন তাঁদের সঙ্গে সাধারণ পরীক্ষার্থীদের কোনও সম্পর্ক নেই।’

টেট সম্পর্কে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যর বক্তব্য, ‘যারা পরীক্ষা নিচ্ছেন বা পরীক্ষা নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এরা পরোক্ষে বা প্রত্যক্ষে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। দুর্নীতিমুক্ত কোনও কিছুই করতে পারে না। এরা ছাত্রদের দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত করে দেয়।’ প্রসঙ্গত, ফেসবুকে ‘ড্বলিউবি টেট এসএলএসটি সেট সিটেট প্রিপারেশন’ নামক একটি পেজ থেকে বেলা একটার সময় একটি প্রশ্ন পত্র আপলোড করা হয়। যদিও, সেই সময় হলের ভিতরে ছিলেন চাকরি প্রার্থীরা। পরবর্তীতে পরীক্ষা দিয়ে বের হতেই জানা যায় মূল প্রশ্ন পত্রের সঙ্গে ভাইরাল হওয়া প্রশ্নপত্রের একাধিক মিল রয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three + thirteen =