মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে আন্দোলন করে আটক ৪ চাকরিপ্রার্থীর জামিন

কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে আন্দোলন করে আটক চাকরিপ্রার্থীরা জামিন পেলেন সোমবার। ২ হাজার টাকার বন্ডে এদিন জামিন মঞ্জুর করা হয়। আগামী ৩০ জানুয়ারি হাজিরা দেওয়ার দিন নির্ধারিত হয়েছে। তবে এদিন আদালত তাঁদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। জামিন পাওয়ার পর আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় তাঁদের। পুলিশি গ্রেফতারের ঘটনায় মানসিক ভাবে যে তাঁরা বিপর্যস্ত, এমনটাই জানান ওই চাকরিপ্রার্থীরা।

আদালত সূত্রে খবর, সোমবার আলিপুর আদালতে ধৃত ৪ চাকরিপ্রার্থীর জামিন মঞ্জুর করা হয়। ধৃত ৪ জনের বিরুদ্ধে ১৪ দিনের জেল হেফাজত চেয়ে আবেদন করেছিল পুলিশ। কিন্তু সেই আবেদন এদিন খারিজ করে দেয় আদালত। প্রসঙ্গত, এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনায় ৫৯ জন আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গত শনিবারই ৫৫ জন চাকরিপ্রার্থীর জামিন মঞ্জুর করে দিয়েছিল আদালত। বাকি চারজনের জামিন মঞ্জুর করা হল সোমবার।

এই মামলায় আন্দোলনকারীদের আইনজীবী আদালতে জানান, তদন্তে কোনও অগ্রগতি নেই। জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কোনও আবেদন পুলিশের নেই। তাই আমার জামিন চাইছি। বিভিন্ন স্কুলে শূন্য পদ পড়ে রয়েছে। ইন্টারভিউ-এর দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়েছিল। মূলত এটা মহিলা চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন ছিল। যে চারজন আছে জেলে। এদের দু’জনকে চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে এসেছে পুলিশ। সিকিউরিটি ভাঙার কোনো বিষয় ছিল না। কিছুই রিকভারি হয়নি নতুন করে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে অনতি দূরে কিছু মহিলা চাকরি প্রার্থীরা হঠাৎ করে প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করে। পুলিশের চোখ এড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে যায় কিছু চাকরিপ্রার্থী। বাড়ির প্রায় ২০০ মিটারের কাছাকাছি পৌঁছে যায় তাঁরা। এরপরেই এই ঘটনায় ৫৯ জন প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেদিনই পুলিশ কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীদের বাড়ির সামনে থেকে সকলে প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে গিয়ে এই ৪জনকে লালবাজার সেন্ট্রাল লক আপে রাখা হয়। আটক চাকরি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারা, ১৮৬ ধারা, ১৪৩ ধারাও দেওয়া হয় পুলিশের তরফে। সঙ্গে জানানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে হাই সিকিউরিটি জোন রয়েছে। সেখানে প্রবেশ করে আইন লঙ্ঘন করেছেন চাকরি প্রার্থীরা। এদিন জামিন পাওয়ার পর এক চাকরি প্রার্থী বলেন, ‘আমরা তো অপরাধী নয়। আমরা তো চাকরির আবেদন করতে গিয়েছিলাম। তারপরেও আমাদের এভাবে জেলে ঢোকানো হল। আমরা মানসিকভাবে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছি। আর কিছু বলার নেই।’ চাকরিপ্রার্থীরা জানান, ওখানে মূলত মহিলা চাকরি প্রার্থীরা আন্দোলন করতে গিয়েছিলেন। তাঁরা আন্দোলনে সামিল ছিলেন না। এরপরেও তাঁদের আটক করা হয়েছে জোর করে বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তাঁরা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 4 =