সুদীপ-তাপস বাকযুদ্ধে চওড়া হচ্ছে ফাটল

তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের এক অনুষ্ঠানে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক মন্তব্য ঘিরে হইচই পড়ে বঙ্গ রাজনীতিতে। কারণ, জাতীয় রাজনীতিতে মমতার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন থাকবেন না, বাংলার অবস্থা ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো হয়ে যাবে।’ সেই মন্তব্য নিয়ে এবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন তৃণমূলের অপর বর্ষীয়ান নেতা তথা বিধায়ক তাপস রায়। সুদীপবাবুর মতো এমন বর্ষীয়ান নেতার মুখে এমন কথা যে কিছুতেই মেনে নিচ্ছেন না, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন তাপসবাবু। তাঁর সোজাসাপ্টা বক্তব্য, ‘বালাই ষাট, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন না কেন! এ কথা বললেন কী করতে উনি। উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে কম করে ১০-১২ বছরের বড়। উনি একথা বলেন কী করে।’

এখানেই শেষ নয়, সুদীপবাবুর অতীতের রাজনীতিক জীবনও স্মরণ করিয়ে দিয়ে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, টউনি তো ৬ বছর সাসপেন্ড হওয়ার ক্ষেত্রে তো বলেছিলেন, দলটা আর ছয় বছর থাকবে না। আরও অনেক কিছু বলেছিলেন, সেই কাগজ-পত্র আমাদের কাছে আছে। ওঁরা স্বামী-স্ত্রী মিলে দলের বিরুদ্ধে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অনেক কিছুই বলেছিলেন।’ এরই পাশাপাশি আগামী দিনে যাতে সুদীপবাবুর মতো ‘জাতীয় পর্যায়ের’ একজন নেতার ভাষার উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে, সেই বার্তাও দিলেন তাপস রায়। বর্ষীয়ান তৃণমূল বিধায়কের বার্তা, ‘এঁরা কথা বলতে গিয়ে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন। আবেগতাড়িত হয়ে কী বলতে, কী বলে ফেলছেন, সেটা বুঝতে পারছেন না। আশা করব, এরপর ওঁরা কথা কম বলবেন, বললেও যেন ভাষার উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে।’ সঙ্গে কড়া সমালোচনার সুরে জানান, ‘এঁরা পরিশ্রম করেননি, খাটেননি, সংগঠন করেননি। এঁরা অলস, কুঁড়ে। এঁরা বরাবর চাটুকারিতাকে, স্তাবকতাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন। সেই জন্যই এসব কথা বেরিয়ে যায়।’

গিয়েও  সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণে এখানেই ক্ষান্ত দেননি তৃণমূল বিধায়ক। বলেন, ‘তৃণমূলের মধ্যে নাটক কি না বলতে পারব না। তবে এটুকু বলতে পারি, যদি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতি না করে অভিনয় করতেন, দাদাসাহেব ফালকে তাঁর জন্য রাখা ছিল। অস্কার পেতেন কি না জানি না, তবে অস্কারে নাম বিবেচিত হত।’

এদিকে তাপসবাবুর নাম না করে পাল্টা মুখ খুলেছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর বক্তব্য, ‘একটা কথাই বলব, হাতি চলে বাজার। আর কিছু বলব না।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘কে কী বলবেন, সেটা তাঁদের নিজের রুচির ব্যাপার। মানুষ বিচার করবেন।’

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − eleven =