‘যুদ্ধং দেহি’ মেজাজে বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন

তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে এবার ক্ষোভ উগরে দিলেন হুগলির বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। দুর্নীতি ইস্যুতে এবার গুরুতর অভিযোগ সামনে আনলেন খোদ তৃণমূলের বিধায়ক। দুর্নীতির কথা জেনেও কেন মুখ খুলছে না দলের একাংশ বা কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না এই সব প্রশ্ন তুলে সরব হতে দেখা গেল বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে। তাঁর দাবি, দিনের পর দিন তিনি এই ইস্যুতে মুখ খুললেও কেউ তাতে গুরুত্ব দেয়নি। তাঁর কথায়, ‘আগে সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’ এই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। তাঁর দাবি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ই সব দুর্নীতি, অন্যায় সামনে এনেছেন। আর সেই কারণেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও বলেন বলাগড়ের বিধায়ক।

এর পাশাপাশি বুধবার ফেসবুকে বিস্ফোরক পোস্টে হুগলি জেলার তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন তিনি। নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে তিনি ঢুকতে পারছেন না বলে ফেসবুক পোস্টে দাবি করেছেন মনোরঞ্জনবাবু।

এদিন তিনি বলেন, ‘ কিছু লোক ছারপোকার মতো দলটাকে শেষ করছে।’ তাঁর কথায়, ‘আমি গুলি খেয়ে মারা যেতে পারি। আমি নিজের এলাকায় যেতে নিরাপত্তার অভাববোধ করছি।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘আমি ফেবসুকে কিছু লিখলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলছে কিছু না বলতে। অথচ, আমি কেন সেটা লিখলাম খতিয়ে দেখা হচ্ছে না।’

এর পাশাপাশি তিনি ফেসবুক পোস্টে এও লেখেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি রাত আটটার সময় আমি ফেসবুক লাইভ করতে চলেছি। বলা চলে শেষ জবাব দিতে চলেছি। সেদিন আমি কিছু নিজের কথা বলব আর কিছু আপনাদের মনের মধ্যে ঘুরপাক খাওয়া প্রশ্নেরও জবাব দেব। সাংবাদিক বন্ধুদেরও বলছি তৈরি থাকুন । তারপর ঘোষণা করবো আগামী দিনের কর্মসূচি। যাতে আমার বা তৃণমূল দলের লাভ হবে না ক্ষতি, সেটা আমি জানিনা। দুই তিন বছর অনেক অপমান অনেক সহ্য করেছি। আর নয়। লড়াই এবার এসপার ওসপার।’

সঙ্গে এও জানান, ‘এক মাটির মাফিয়া বালি মাফিয়া গাঁজার পাচারকারীদের সহায়ক জুয়ার বোর্ড চালানো উপনেতা আমাকে চোর বলেছে খুনি বলেছে। আমি নাকি মহাশ্বেতা দেবীর লেখা নিজের নামে ছাপিয়ে কয়েক লক্ষ না কোটি কামিয়েছি । সেই আমাকে দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলাগড়ের বিধায়ক বানিয়েছেন।’ আর এখানেই বলাগড়ের বিধায়কের প্রশ্ন, ‘আমি যদি এই তাহলে দিদি বা কেমন মানুষ ? তিনি আমার বিষয়ে কোন খোঁজ খবর নিলেন না ? আর এই দলটি বা কেমন ? যারা এমন একটা চোর ছ্যাঁচোরকে দলের সঙ্গে যুক্ত করলেন? তাহলে যে বিরোধীরা বলে ‘চোর চোর চোর চোর- তৃণমূলের সবাই চোর’ , সেটাই কি সত্যি? চোর ছাড়া দলে আর কোনও লোক নেই?’

এখানেই শেষ নয়, দলেরই এক নেত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছেন তিনি। তাঁর দাবি, নিজে দুর্নীতি করার পরও বিধায়ককে হুমকি দিচ্ছেন ওই নেত্রী। বালি মাফিয়া বলে ওই নেত্রীকে কটাক্ষ করার পাশাপাশি, মনোরঞ্জন ব্যাপারীর অভিযোগ, দীর্ঘ চার-পাঁচ বছর একজন শিক্ষিকার পদে থেকে একদিনও কাজ না করে বেতন পেয়েছেন ওই নেত্রী। সেই নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিধায়ক। এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘কেমন করে মাইনে পেল, সেটাও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে থেকে আমি জেনে নেবো।’

অন্যদিকে, যে তৃণমূল যুব নেত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে মনোরঞ্জন, সেই যুব নেত্রী অবশ্য জানান, ‘আমি দলের অনুগত সৈনিক। আমি দলকে জানিয়েছিল। আমাদের তরফে কোনও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নেই। দল যা সিদ্ধান্ত নেয় সেটা শিরোধার্য।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 1 =