রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে জড়িত থাকার ঘটনায় টানা ১৬ ঘণ্টা তল্লাশি আর জিজ্ঞাসাবাদের শংকর আঢ্যকে শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা হয় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে, ইডি দফতরে। এরপর শনিবার সকালে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান স্ত্রী, মেয়ে ও পরিবারের ঘনিষ্ঠরা। সেখানেই শংকর আঢ্যর মেয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান, ‘চক্রান্ত করা হয়েছে বাবার বিরুদ্ধে। তদন্ত যত এগোবে, জবাব দেওয়া হবে।’ পাশাপাশি এও জানান, ‘কে চক্রান্ত করেছে বলতে পারছি না, তদন্ত যত এগোবে জবাব দিয়ে দেব। এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কোনও লেনদেন হয়নি বাবার সঙ্গে। আইনের কাছে আবেদন যেন সঠিকভাবে বিচার হয়।’ এদিকে বনগাঁর তৃণমূল নেতার স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্যরও দাবি একই। স্বামী নির্দোষ, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। জ্যোৎস্নার অভিযোগ, তৃণমূলের অন্যান্য নেতাদের যেভাবে জ্যোতিপ্রিয়র সঙ্গে যোগাযোগ ছিল, একই ভাবে শংকরেরও পরিচয় ছিল প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। জ্যোৎস্নার অভিযোগ, ইডি-র আধিকারিকরা তাঁর স্বামীর সঙ্গে ব্যবসা সংক্রান্ত কথাই বলেন। রাতে ইডির অফিসাররা কোনও নথি দেখিয়ে জানান, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার করা হল। যদিও জ্যোৎস্নার দাবি, রেশন দুর্নীতির সঙ্গে শংকরের কোনও যোগাযোগ নেই। একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, জেলার আর পাঁচজন তৃণমূল নেতার সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের যেমন যোগাযোগ ছিল, শংকর আঢ্যর সঙ্গেও তেমনই ছিল। আলাদা কোনও ঘনিষ্ঠতা ছিল না। তাই ইডি আধিকারিকদের কথায় সংশয় হচ্ছে তাঁর। পরিবারের দাবি, চক্রান্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শংকরের স্ত্রী বনগাঁ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান। এদিকে জল্পনা শুরু হয়েছে, যে কাগজটি দেখিয়ে শংকরবাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাতে ঠিক কী লেখা ছিল তা নিয়ে। শুক্রবার রাতে শংকর আঢ্যর গ্রেপ্তারির পর স্ত্রী জ্যোৎস্নাদেবী জানান, ইডি অফিসাররা পকেট থেকে একটি কাগজ বের করে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম উল্লেখ করেন। তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই গ্রেফতারি, এমনটাই জানান কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা। এখন প্রশ্ন উঠছে সেই কাগজে আসলে কী লেখা ছিল। এদিন সকালে জ্যোৎস্নাদেবীর বক্তব্য, ইডি আধিকারিকরা ওই কাগজ দেখিয়ে বলেন যে জ্যোতিপ্রিয়ই নাকি শংকরবাবুর নাম বলেছেন। তবে এ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধানের পরিবার।