‘সংহতি যাত্রা’ ঘোষণার পরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ  শুভেন্দু

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘সংহতি যাত্রা’র কথা ঘোষণা করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ঘোষণা করেন আগামী ২২ জানুয়ারি অর্থাৎ যে দিন অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন হবে সে দিন রাজ্যে ‘সংহতি যাত্রা’র কথা। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। সেই উদ্যোগের বিরোধিতা করে বুধবার সকালেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে দেখা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুকে। তাঁর দাবি, ওই দিন সংহতি যাত্রা হলে রাজ্যে নষ্ট হতে পারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। ওই যাত্রা যাতে না হয়, সেই আর্জি জানিয়েই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন বিজেপি বিধায়ক। এদিকে আদালত সূত্রে খবর, মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি মধুরেশ প্রসাদের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলায় যুক্ত করা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। বৃহস্পতিবার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

এখানেই শেষ নয়, রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন এ রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকা গুলিতে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন ও রুটমার্চ করানোর দাবিও জানান পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কারণ, অতীতের বেশ কিছু অশান্তির ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সে কারণেই এই আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার দাবি বলেই জানান তিনি। সঙ্গে এও বলেন, ‘আমি সংবিধানের যারা রক্ষাকর্তা রয়েছেন তাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও দাবি জানাচ্ছি যাতে অযোধ্যায় রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা ও রাম মন্দির উদ্বোধনকে সামনে রেখে গোটা দেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন সুষ্ঠুভাবে পালন করার লক্ষ্যে তারাও যাতে বাংলার অতীতের নানান অশান্তির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখেন। ২২ তারিখ সেনসিটিভ এলাকায় প্যারামিলিটারি ফোর্স মোতায়েন ও রুটমার্চ করার জন্য আমি রাজ্যপালকে বলব তিনি যেন কেন্দ্রকে অবিলম্বে এ ব্যাপারে জানান।’

একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিদ্ধ করে শুভেন্দু এও বলেন, ‘রাম মন্দির উদ্বোধনের দিন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করে সেদিন অশান্তি পাকানোরও চেষ্টা করতে চাইছে শাসক দল। এর থেকে সবাই সতর্ক থাকুন।’

এদিকে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন হলেও সারা দেশ জুড়ে দিনটি উদযাপনের নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্য জুড়ে সম্প্রীতির বার্তা দেওয়ার জন্য ওই দিনটিকেই বেছে নিয়েছেন মমতা। তাঁর ঘোষণা অনুযায়ী, ২২ জানুয়ারি কলকাতা ও প্রত্যেকটি জেলায় ব্লকে ব্লকে মিছিল করে সংহতির বার্তা দেওয়া হবে। আর কলকাতায় হাজরা থেকে পার্ক সার্কাস ময়দান পর্যন্ত হবে মেগা মিছিল। সেখানে উপস্থিত থাকবেন সব ধর্মের মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় স্বয়ং থাকবেন এই মিছিলের নেতৃত্বে।

শুভেন্দু অধিকারীর যুক্তি হল, ওই দিনে হাজরা থেকে পার্ক সার্কাস অবধি মিছিল হলে ভুল বার্তা যেতে পারে। এই প্রসঙ্গে হনুমান জয়ন্তী সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেন বিরোধী দলনেতা, যেখানে বিভিন্ন জায়গায় সম্প্রীতি বিঘ্নিত হয়েছে। তাই এবারও তেমন কিছু হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে শুভেন্দুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine + four =