গঙ্গাসাগরে পুণ্যার্থীদের থেকে রীতিমতো ‘লুঠ’ হয়েছে, এমনটাই দাবি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর। এই প্রসঙ্গে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে দাবি করেন, ভেসেল, নৌকোয় ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছে ৩৪৪ গুণ। সঙ্গে এও জানান, যে ভাড়া ৯ টাকা, তা মেলার সময়ে নেওয়া হয়েছে ৪০ টাকা। এক লাফে ৩১ টাকা বৃদ্ধি। অঙ্গ কষে শুভেন্দু হিসাব দেখান শতাংশের বিচারে তা বেড়েছে ৩৪৪ গুণ। তিনি এও উল্লেখ করেছেন, গঙ্গাসাগর মেলায় স্বাভাবিক বা অন্য সময়ের ভাড়ার তুলনায় ভেসেলের ভাড়া ৭৬ টাকা করে বেশি নিয়েছে রাজ্য সরকার। আর ৫০ লক্ষ মানুষের কাছ থেকে সেভাবে নেওয়া হলে ৩৮ কোটি টাকা তুলেছে রাজ্য সরকার, দাবি শুভেন্দু অধিকারীর।
উদাহরণ হিসাবে তিনি এও উল্লেখ করেন, নামখানা থেকে বেনুবনে অন্য সময়ে ভাড়া থাকে ৪০ টাকা। মেলার সময়ে তা নেওয়া হয়েছে ৮৫ টাকা। যা ১১২.৫ শতাংশ বেশি বলে দাবি করেন শুভেন্দু অধিকারী। আর কচুবেড়িয়া থেকে ৮ নম্বর লটে ভাড়া ৯ টাকা। অথচ মেলার সময় ৪০ টাকা নেওয়া হয়েছে। যা এক লাফে ৩১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেটাই বেড়েছে ৩৪৪ গুণ।
মেলায় এই ভাবে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে মমতা সরকারকে বিঁধতে গিয়ে রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি। সঙ্গে লেখেন, টেটের প্রশ্নপত্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গও। শুভেন্দুর মতে, ঠিক একইভাবে নিয়োগ না হলেও টেট পরীক্ষার জন্য ফর্মের দাম এক লাফে ১০০ থেকে ৫০০ করা হয়েছে। শতাংশের বিচারে ৪০০ শতাংশ বৃদ্ধি। যার মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ১৫ কোটি ৪৫ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা তুলেছে বলেও এক্স মাধ্যমে অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা।
তবে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতাই প্রথম নয়, এর আগেও বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার এই একই অভিযোগ করেছিলেন মেলা প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়েই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগর যাওয়ার পরদিনই সেখানে যান বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মেলা প্রাঙ্গনের বিভিন্ন অব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। তখনই তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ‘এখানে বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করে পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে বলা হচ্ছে সরকারের নির্ধারিত ভাড়া দিতে। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে আমরা তো এতটা ঘুরলাম, কোথাও তো কোনও বোর্ড দেখতে পেলাম না।’ সঙ্গে এও প্রশ্ন তোলেন, ‘কোথায় সরকারের বেঁধে দেওয়া রেট চার্ট? তাহলে পুণ্যার্থীরা জানবেন কীভাবে? এখানে তো রীতিমতো লুঠ চলছে।’
এই ঘটনায় সাগরের বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন,‘বিরোধী দলনেতা ভাড়া বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্দেশে যে মন্তব্য করেছেন, তা অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন। কারণ আগের সরকার গঙ্গাসাগর মেলার ভাড়া বৃদ্ধি করেনি। তবে পুণ্যার্থীদের থাকার জায়গা করে ৫ টাকা করে ট্যাক্স নিত। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী পুণ্যার্থীদের ওপর থেকে কর তুলে নেওয়া হয়েছে। কোনও রেট, বাসভাড়া কিছুই বাড়ানো হয়নি। যা রেট ছিল, সেটাই আছে।’