ফ্লোর টেস্টে উত্তীর্ণ ঝাড়খণ্ডের চম্পাই সোরেনের সরকার

বিধানসভায় ফ্লোর টেস্টে উত্তীর্ণ হল ঝাড়খণ্ডের চম্পাই সোরেনের সরকার। সোমবার সকাল ১১টায় সংসদের কার্যক্রম শুরু হয়। কার্যপ্রণালী শেষে, আস্থা প্রস্তাবের ওপর হাউসে আলোচনার পর ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোটে ৪৭ জন বিধায়ক চম্পাই সোরেন সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন এবং ২৯ জন বিরোধিতায় ভোট দেন। বিজেপি পেয়েছে ২৫ ভোট, আজসু পেয়েছে ৩টি এবং এনসিপি পেয়েছে ১টি ভোট। নির্দল বিধায়ক সরযূ রাই ভোটগ্রহণে অংশ নেননি। অমিত যাদব এবং অন্যান্য বিধায়করা হাউসের কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন না। ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও ফ্লোর টেস্টে অংশ নিতে ইডি হেফাজতে বিধানসভায় যান। তবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি হেমন্ত সোরেন।

এদিনের আস্থা ভোটের পর ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক সংকট আপাতত মিটল বলা যায়। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে হেমন্ত সোরেনের ইস্তফা এবং জমি কেলেঙ্কারি মামলায় তাঁকে ইডি গ্রেফতার করার পর, গত শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন চম্পাই সোরেন। এদিন, নবগঠিত সরকারকে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হত। সেই পরীক্ষায় সোমবার সসম্মানে উত্তীর্ণ হলেন চম্পাই সোরেন।

মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা প্রধান হেমন্ত সোরেন ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে এই রাজ্যে এক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিবেশ তৈরি হয়। গত ৩১ জানুয়ারি, হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করে ইডি। ১ ফেব্রুয়ারি, রাজ্যের তৎকালীন পরিবহন মন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিশিষ্ট নেতা চম্পাই সোরেনকে মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত করেন রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণাণ। এদিকে সোমবার রাজ্য বিধানসভায় আস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভাষণ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেন বলেন, ‘আমি গর্ব করে বলছি, আমি হেমন্ত সোরেন পার্ট-২।’ এরই পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘আমাদের রাজ্যে ১৫০ বছর ধরে খনির কাজ হয়। কিন্তু এখানকার মানুষ এক টুকরো লোহা ছুঁয়ে পর্যন্ত দেখেনি।আপনারা রাজ্যের যে কোনও গ্রামে গিয়ে দেখবেন, প্রতিটি বাড়ি হেমন্ত সোরেনের প্রকল্পগুলির সুবিধা পাচ্ছে। সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মানুষকে ছুঁতে পেরে গর্বিত। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার করা হচ্ছে। এখন গোটা দেশ দেখছে হেমন্ত সোরেনের প্রতি কতটা অবিচার করা হচ্ছে।যে জমি চুক্তির অভিযোগ করা হচ্ছে, ওই সম্পত্তি তাঁর নামে নেই। তাও তাঁকে জেলে পাঠানো হচ্ছে। যখনই কোনও আদিবাসী ব্যক্তি সরকার চালায়, তখনই সেই সরকারকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।’ এরই পাশাপশি চম্পাই সোরেন এদিন এও মনে করিয়ে দেন, তিনি শিবু সোরেনের ছাত্র। শিবু সোরেন আন্দোলন করতে শিখিয়েছেন। হেমন্ত সোরেনের স্কিম দেখা যাবে ঘরে ঘরে। ইডি, সিবিআই ক্ষমতার অপব্যবহার করা হচ্ছে। আর এটা গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি। আর সেই কারণেই সারা দেশে আজ গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে। জনধর এবং হেমন্ত সোরেনকে বাঁচাতে আমার আপনার সমর্থন দরকার।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five − three =