ত্রিকোণ প্রেমের বলি আশুতোষ কলেজের ছাত্র তারাশংকর

‘ত্রিকোণ প্রেমের বলি আশুতোষ কলেজের ছাত্র তারাশংকর সরকার’, হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলায় এমনই দাবি মৃত তারাশংকর সরকারের পরিবারের। পরিবারের সদস্যদের তরফ থেকে  অভিযোগের তির উঠেছে মৃত তারাশঙ্করের এক সহপাঠীর দিকে। বুধবার মৃতের পরিবারের আইনজীবী আদালতে জানান, ‘অন্য এক কলেজের পড়ুয়া বান্ধবীকে নিয়ে কিছুদিন ধরে ওই বন্ধুর সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল তারাশংকরের। পরিবারের আশঙ্কা ত্রিকোণ প্রেমের শিকার তারাশংকর। তারই জেরে এক্সকারশনে গিয়ে ঝর্নায় তাঁকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়। এদিকে যাঁর নামে অভিযোগ, তিনিও একইসঙ্গে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি কলেজের শিক্ষকদের। পরে তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বলেও তারাশংকর পরিবারকে ফোনে জানান কলেজের শিক্ষকরা। কিন্তু তারাশংকর দাদা সেখানে গিয়ে দেখেন ওই সহপাঠী স্বাভাবিকভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ঘটনার দু’দিন পরে দেহ উদ্ধার হয় তারাশংকরের।

প্রসঙ্গত গত নভেম্বর মাসে ঝাড়খণ্ডে কলেজ এক্সকারশন সেরে ফেরার পথে ওড়িশার কেওনঝড়ে একটি জলপ্রপাত দেখতে যান তারাশংকর ও তাঁর বন্ধুরা। সেই সময় তারাশংকর ও আরও এক ছাত্র জলপ্রপাতে পড়ে যান। যদিও সেই বর্তমানে ছাত্র ঠিকই আছেন। কিন্তু তারাশংকরের আর ফেরা হয়নি। আর সেই কারণেই সন্দেহ হয় পরিবারের। সেই সময় জানা যায়, তারাশংকরের বন্ধু আগে পড়ে গিয়েছিলেন ওই ধরনায়। এদিকে এই ঘটনার পর লাগাতার তল্লাশি চালিয়ে দেহ উদ্ধার করে এনডিআরএফ। তারাশংকরের মৃত্যুতে ঘিরে আইনি পথে হাঁটার কথা আগেই জানিয়ে দেয় সরকার পরিবার। সেই সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং যে বন্ধু তাঁকে জলপ্রপাতের কাছে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, উভয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তারাশংকরের পরিবারের সদস্যরা। আর এদিনের শুনানিতে সেই এই অভিযোগই আদালতে  তোলা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।

এখানেই শেষ নয়, ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে আরামবাগ থানা ও ওড়িশা পুলিশের বিরুদ্ধে। কোনও তদন্ত না করেই একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়। আর এই মামলা ফেলেও রাখা হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন মৃত তারাশংকরের পরিবারের সদস্যরা।

এদিকে আদালত সূত্রে খবর, বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর নির্দেশের পরও এই মামলায় বৃহস্পতিবার ওড়িশা সরকারের তরফে শুনানিতে কেউ হাজির ছিলেন না। তাই রাজ্যকে ফের ওড়িশা সরকারের কাছে এই নির্দেশের কপি পাঠিয়ে আগামী শুনানিতে হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ মার্চ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × four =