অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেবের বৈঠক সফল বলেই খবর তৃণমূল শিবিরের। তৃণমূল সূত্রের খবর, দেব আবারও ঘাটালের প্রার্থী হতে চলেছেন। আরও একধাপ এগিয়ে তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হচ্ছেন দেব-ই। অর্থাৎ যা নিয়ে এত জল্পনা চর্চা চলছিল, তা এবার হয়ত থামল। তৃণমূল সূত্রে খবর, দেবের সঙ্গে দলের কখনওই কোনও ভুল বোঝাবুঝি বা মনোমালিন্য ছিল না। দলের কিছু ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্য থাকতে পারে। সে বিষয়ে এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয় বলে খবর।
শনিবার বিকেলেই তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরপর বৈঠক করলেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী অর্থাৎ দেব। আগেই জানিয়েছিলেন শনিবার তিনি অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, এদিন বিকেলে অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
সূত্রে খবর, শনিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে যান দেব। প্রায় ৫০ মিনিট ধরে দুজনের বৈঠক। আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনি দাঁড়াবেন কিনা, রাজনীতি থেকে কি সন্ন্যাস নেবেন নাকি ফের ঘাটালে তিনি লড়বেন, এই বিষয় নিয়েই দু’জনের মধ্যে বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, এবার আর লোকসভা নির্বাচনে লড়তে রাজি ছিলেন না দেব। এর আগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নিয়ে কালীঘাটের সাংগঠনিক বৈঠকেও সেই কথা জানিয়েছিলেন দেব। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বারবারই দাবি করা হয়, দেব তৃণমূলে ছিলেন আছেন এবং থাকবেন। শনিবার ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে দেবের বৈঠকের পর, তৃণমূলের এই দাবিতেই সিলমোহর পড়ে খবর। অভিষেক দেবেরসমস্ত বিষয় শুনেছেন বলেই সূত্র মারফত খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমনও সূত্রের খবর, খুব বড় কোনও ঘটনা না হলে ঘাটাল থেকে আবারও প্রার্থী হতে চলেছেন দেব-ই। তৃণমূল সূত্রে এও খবর মেলে, এদিন অভিষেকের সঙ্গে ৪৫ মিনিটের সফল বৈঠকের পর দেব কালীঘাটে যান।
এদিকে গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহে দেব-এর রাজনীতি থেকে সরে আসা নিয়ে জল্পনা আরও বাড়তে শুরু করে। লোকসভা ভাষণের আগে তাঁর ফেসবুক পোস্ট নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়। প্রসঙ্গত, গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সরকারি পদ থেকে দেব ইস্তফা দেওয়ার পরেই জল্পনা বাড়তে থাকে। এবার কি তিনি সাংসদ পদও ছাড়তে চলেছেন? এমনই জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে রাজনৈতিক মহলে। যদিও দেবকে নিয়ে দলের তরফে এখনও কোনও সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। দেব দলের গুরুত্বপূর্ণ সংসদ এবং তাঁর ব্যাপারে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন বলে জানিয়ে দেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
এদিকে আবার তাঁর রাজনীতি ছাড়ার মাঝেই কাটমানি নিয়ে উঠে আসে একের পর এক খবর। এর মাঝেও ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলুইয়ের একটি অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয়। যার সত্যতা যাচাই করেনি একদিন। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, সংসদ ফান্ড থেকে কাজ করার সময় ৩০ শতাংশ কাটমানি নেওয়া হতো। যদিও, এই খবর প্রকাশের পর দেব নিজে জানিয়েছিলেন, ওঁর হাত ধরে আমি রাজনীতি শিখেছি। উনি তো আমার রাজনীতির গুরু। পালটা শুক্রবারই দেবের বিষয় নিয়ে একেবারে ১৮০ ডিগ্রি অবস্থান পরিবর্তন করেন শঙ্কর। দেবের কাজের ভুয়সী প্রশংসা করে তিনি দেশের সাংসদ হিসেবে গর্ব বলেও জানান শঙ্কর।