ফের ‘দিল্লি চলো’ ডাক কৃষকদের

তিন কৃষি আইন বাতিল এবং কৃষির ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের দাবিতে ২০২০ সালে পথে নেমেছিলেন কৃষদের একাংশ। এই আন্দোলনের জেরে পিছু হঠতে বাধ্য হয় নরেন্দ্র মোদি সরকারকে। চার বছর পর ফের পথে কৃষকেরা। এবার লখিমপুর খেরিতে কৃষক খুনের তদন্ত সহ একগুচ্ছ দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁরা। আন্দোনলকারী কৃষক সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে যে ২০২০ সালে কৃষির ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই আন্দোলনে তাঁদের অন্যতম দাবি কৃষি সহায়ক মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা। এই আন্দোলনে কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও, সরকার এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ। এর ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। এবারও অন্নদাতাদের দাবিগুলির মধ্যে কৃষি সহায়ক মূল্য নির্ধারণের উপর দেওয়া হয়েছে জোর। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট আইন প্রণয়নেরও দাবি করা হয়েছে। এদিকে সূত্রে খবর, কৃষিঋণ মুকুব, কৃষির ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সহ একাধিক দাবিতে মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি কৃষক সংগঠনের পক্ষ থেকে দিল্লি অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। পঞ্জাব ও হরিয়ানার হাজার হাজার কৃষক এই অভিযানে সামিল হয়েছেন। এদিকে কৃষকদের রুখতে কড়া প্রশাসনও। বিক্ষোভকারীদের রাজধানীতে ঢোকা রুখতে জারি করেছে ১৪৪ ধারা। সেই সঙ্গে বসানো হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া এবং কংক্রিটের দেওয়াল।
এরই পাশাপাশি  বিদ্যুৎ আইন, ২০২০ বাতিল, কৃষিঋণ মুকুব, লখিমপুর খেরিতে কৃষক হত্যাকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির শাস্তিরও দাবি করা হয়েছে কৃষক সংগঠনগুলির তরফ থেকে। এরই পাশপাশি মৃত কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিতেও সরব হয়েছে তারা। এছাড়া, চার বছর আগে আন্দোলনের সময় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় মামলা। মামলাগুলি প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিলেও, সরকার কথা রাখেনি বলে দাবি। মামলা প্রত্যাহারের জন্যও সরব হয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি।

মঙ্গলবারের পাশাপাশি একগুচ্ছ দাবিতে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ভারত বনধের ডাক দিয়েছে কৃষকদের সংগঠন সংযুক্ত মুক্তি মোর্চা। বনধে সামিল হতে চলেছে সিটু সহ দেশের সমস্ত ট্রেড ইউনিয়নগুলি। বনধের সমর্থনে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সংগঠগুলির পক্ষ থেকে। এই বনধে বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলগুলিকে সামিল হওয়ার জন্য করা হয়েছে আবেদন। প্রসঙ্গত, চার বছর আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালনে নরেন্দ্র মোদি সরকার ব্যর্থ বলে দাবি করতে দেখা গিয়েছিল সম্মিলিত কিষাণ মোর্চার নেতা জগজিৎ সিং ডাল্লেওয়াল এবং কিষাণ মজদুর সংগ্রাম কমিটির সদস্য সারওয়ান সিংকে। সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি আদৌও পূরণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তাঁরা। কৃষিঋণ মুকুব এবং স্বামীনাথ কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকারি সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 5 =