সন্দেশখালির ইস্যুতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজ্য রাজনীতি। একদিকে যেমন স্থানীয় মহিলারা একের পর এক অভিযোগ আনছেন, আর এই সব অভিযোগকে সামনে এনে শাসকদলকে বিঁধছে বিরোধী শিবির। এসবের মধ্যেই বিরোধীদের পাল্টা চাপে ফেলতে তৃণমূলের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি অডিয়ো ক্লিপ শেয়ার করা হয়। আর এই ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপে শোনা যাচ্ছে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলের গলা। এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূল সেই অডিয়ো ক্লিপ শেয়ার করে দাবি করেছে, তারা নাকি বিজেপির ‘মিশন সন্দেশখালির’ পর্দাফাঁস করে দিয়েছে। ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপে দাবি করা হচ্ছে, এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছেন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পল। সেখানে কথা হচ্ছে সন্দেশখালি নিয়ে। সন্দেশখালি নিয়ে সিবিআই তদন্ত চাওয়ার পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে সেখানে। অপর ব্যক্তি অগ্নিমিত্রার কাছে জানতে চাইছেন, এটিকে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মতো মোড় দেওয়ার পরিকল্পনা করা যায় কি না। উত্তরে অগ্নিমিত্রা বলছেন, নিশ্চয়ই এটি নিয়ে পরিকল্পনা চলছে।
এই ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপ এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করে তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হয়, অগ্নিমিত্রা অসাবধনতাবশত এই অডিও প্রকাশ করে ফেলেছেন যে সন্দেশখালির ঘটনা শুধুই তাদের একটি পিআর ক্যাম্পেন। অর্থাৎ একটি প্রচারমুখী কর্মসূচি। সেই জন্য এটিকে সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রামের মতো গণ আন্দোলনের রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে দাবি তৃণমূলের।
যদিও তৃণমূলের তরফে শেয়ার করা এই ভাইরাল অডিয়ো ক্লিপের পাল্টা জবাব দেন অগ্নিমিত্রাও। তৃণমূলকে কটাক্ষ করে অগ্নিমিত্রার পরামর্শ, তারা যেন কোনও কিছু ভাইরাল করার আগে হোমওয়ার্ক করে নেয়। শাসক শিবিরকে বিঁধে বিজেপি নেত্রী বললেন, ‘আপনাদের বলব একটু হোমওয়ার্ক করে ভাইরাল করুন। এটা কোনও ফোনে ট্যাপ করা বা আড়ি পেতে ফাঁস হয়ে গিয়েছে, এরকম বিষয় নয়। এটি একটি ভার্চুয়াল আলোচনা হচ্ছিল। সেখানে গোটা পৃথিবী থেকে হাজারের কাছাকাছি বাঙালি-অবাঙালি থেকে প্রবাসীরা জানতে চাইছেন সন্দেশখালিতে কী ঘটছে। আড়ি পেতে পর্দাফাঁস হয়ে গিয়েছে, এরকম কোনও বিষয় নয়। কারণ আমি পাবলিক ফোরামে কথা বলছিলাম।’
সঙ্গে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের যে প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে তা নিয়েও শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি অগ্নিমিত্রা। এই প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট জানান, ‘নন্দীগ্রামে যখন মা-বোনেরা সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছিলেন, তখন এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই লড়াইতে সামিল হয়েছিলেন। সেই লড়াই ঠিক ছিল। সেই লড়াই ‘হিনিয়াস ক্রাইম’ ছিল না। আর আজ যখন সন্দেশখালির মা-বোনেদের ইজ্জত নিয়ে খেলা হয়েছে, তখন বিরোধীরা যদি তার প্রতিবাদ করে, সেটা হয়ে যাচ্ছে ‘হিনিয়াস ক্রাইম।’