জামাইকে নিচু জাত বলায় মামলা গড়াল হাইকোর্টে

পারিবারিক অশান্তি প্রায়ই পৌঁছায় শীর্ষ আদালত পর্যন্ত। তবে শ্বশুর-জামাইয়ের ঝগড়া হাইকোর্ট পর্যন্ত পৌঁছানো বিরল-ই বলা যায়। তবে সে ঘটনাও ঘটল কলকাতা হাইকোর্টে। এই ঘটনার সূত্রপাত বছর পাঁচেক আগে। জামাইকে শ্বশুরমশাই এমন কথা বলেছিলেন যে তার জেরে তাঁর বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। সেই পরোয়ানা থেকে অব্যাহতি পেতেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শ্বশুর। বুধবারই ছিল শুনানি। কিন্তু সেখানেও কোনও লাভ হয়নি। হাইকোর্ট ওই শ্বশুরের আর্জি খারিজ করে দেয়। নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় যাতে তিনি অংশ নেন, সেই নির্দেশই দেয় হাইকোর্টের বিচারপতি অজয়কুমার মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চ। অভিযোগকারী জামাই উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল এলাকার বাসিন্দা। তাঁর শ্বশুরবাড়ি পঞ্জাবে। জামাইয়ের অভিযোগ, ২০১৯ সালে পঞ্জাবের বাসিন্দা এক যুবতীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ে পর কিছু আচার-রীতি পালনের জন্য তাঁর স্ত্রীকে পঞ্জাবে নিয়ে যায় আত্মীয়রা। ২০১৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর অভিযোগকারীর স্ত্রীকে পঞ্জাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ১০ দিন পর তাঁকে আনতে যান স্বামী। অভিযোগ, সেই সময় শ্বশুর তাঁকে শারীরিক হেনস্থা করেন। শুধু তাই নয় জাত তুলে গালাগালি দেন বলেও অভিযোগ শ্বশুরের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ শ্বশুর জামাইকে ‘নিচু জাত’ বলে গালি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘তোমার মতো নিচু জাতের লোকের বাড়ি আমার মেয়ে যাবে না।’ এরপরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ৪ মার্চ ফের স্ত্রী’কে আনতে পঞ্জাবে যান ওই ব্যক্তি। কিন্তু সেবারও শ্বশুরবাড়িতে জামাইকে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ। এরপর আর থেমে থাকেননি জামাই। রাজ্যে ফিরে জগদ্দল থানায় শ্বশুরের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন তিনি। ২০২২ সালের ১৮ মে বারাসত আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। শ্বশুরের বিরুদ্ধে তফশিলি জাতি-জনজাতি আইনে মামলা রুজু করে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। একাধিক বার সমন জারির করার পরও শ্বশুর হাজিরা না দেওয়ায়, তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বারাসত আদালত।

এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্ত শ্বশুর। তাঁর দাবি, জামাই তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। তাই এফআইআর বাতিলের আর্জি জানান আদালতে। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ তদন্ত না করেই চার্জশিট জমা দিয়েছে। তবে শ্বশুরের আবেদন খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি জানান, পুলিশ তফশিলি জাতি-জনজাতি আইনে চার্জশিট দিয়েছে, এ ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবে না হাইকোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 7 =