রাজ্যে সিপিএমের সঙ্গে যে ফর্মুলায় আসন সমঝোতা হয়েছে তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে চিঠি পাঠালেন প্রদেশ কংগ্রেসের একদল নেতা। বিধান ভবন সূত্রের খবর, এঁদের মধ্যে রয়েছেন চার জেলা সভাপতিও। আছেন দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ প্রসাদও। এছাড়াও রয়েছেন জলপাইগুড়ি, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেসের সভাপতি। বিক্ষুব্ধ এই কংগ্রেস নেতারা বার্তা দিয়েছেন, বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা সঠিক ভাবে হয়নি। সিপিএম-সহ বাম শরিকদের বেশি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আবার সিপিএম পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রটি কংগ্রেসকে ছাড়তে চাইলেও তাতে গররাজি বামফ্রন্ট শরিক ফরোয়ার্ড ব্লক। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের সিদ্ধান্তে অখুশি ফরোয়ার্ড ব্লকের তরফে পুরুলিয়া কেন্দ্রে পৃথক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। পুরুলিয়ায় দলের প্রার্থী হবেন ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতো।
যদিও বামফ্রন্টের তরফে এই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। ফরোয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বুধবার বলেন, ‘কোচবিহার, পুরুলিয়া ও বারাসত লোকসভা কেন্দ্রে আমাদের প্রার্থীর নাম বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে জানানো হয়েছে। কোচবিহার আসনের প্রার্থীর নাম বিমান বসু নিজে ঘোষণা করেছেন। পুরুলিয়া কেন্দ্রের প্রার্থীর নামও তিনি যাতে ঘোষণা করেন, সেই অনুরোধ জানানো হয়েছে।’
এদিকে প্রদেশ কংগ্রেস পুরুলিয়া আসনে প্রবীণ নেতা নেপাল মাহাতোকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এআইসিসি ইতিমধ্যে নেপালের নামে সিলমোহরও দিয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে তা ঘোষণা হয়নি। কিন্তু ফরোয়ার্ড ব্লক অনড় থেকে নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেওয়ায় পুরুলিয়া আসনে বাম-কংগ্রেস জোট না হওয়ার সম্ভবনা প্রবল। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া কেন্দ্রে তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস, ফরোয়ার্ড ব্লকের চতুর্মুখী লড়াই হয়েছিল। সেই সময়ে সিপিএম পরোক্ষে কংগ্রেস প্রার্থীকে মদত দিয়েছিল বলে বাম শরিকরা অভিযোগ তুলেছিল। যদিও সেই অভিযোগ মানতে চায়নি সিপিএম। এদিন প্রার্থী ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে ফরোয়ার্ড ব্লক পুরুলিয়া আসনে দেওয়াল লিখনও শুরু করে দিয়েছে।
এই টানাপড়েনের মধ্যে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে প্রদীপ ভট্টাচার্যের নাম অনুমোদন করেছে বলে সূত্রের খবর। এদিকে দিল্লিতে বুধবার সনিয়া গান্ধি ও খাড়গের উপস্থিতিতে কংগ্রেসের ইলেকশন কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে মহারাষ্ট্র, গুজরাত ও রাজস্থানের প্রার্থী তালিকা নিয়ে আলোচনা হয়। এই তিন গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য নিয়ে আলোচনা দীর্ঘ সময় ধরে চলায় পশ্চিমবঙ্গের প্রার্থী তালিকা এ দিন ঘোষণা করা হয়নি বলে এআইসিসি সূত্রের খবর।