ফের শহর কলকাতায় ভেঙে পড়ল বহুতল। বাগুইআটিতে তিনতলা বাড়ির একাংশ ভেঙে মৃত্যু হল এক কিশোরের। স্থানীয় সূত্রে খবর, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে গিয়েছিল বাড়িরই এই বাসিন্দা। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। মৃত কিশোরোর নাম ধ্রুবজ্যোতি মণ্ডল।
বৃহস্পতিবার ছিল দিনভর বৃষ্টি। রাতে বাগুইআটি থানা এলাকার অশ্বিনীনগরে আচমকাই ভেঙে পড়ে তিনতলা বাড়ির একাংশ। ছাদ ভেঙে চাপা পড়ে যায় একতলায় থাকা ধ্রুবজ্যোতি। সিমেন্টের চাঙরের নিচে চাপা পড়ে যাওয়ায় ওই কিশোরকে উদ্ধার করতে বেগ পেতে হয় দমকলকে। অন্যদিকে বাড়ি ভেঙে পড়ার পাঁচ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল। অচৈতন্য অবস্থায় ওই কিশোরকে আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
এবারেই উচ্চমাধ্যমিকে প্রায় ৮০শতাংশ নম্বর পেয়ে পাস করেছিল ধ্রুবজ্যোতি। এলাকায় মেধাবী পড়ুয়া হিসাবেই পরিচিত ছিল সে। তাঁর বাবা একসময় সিপিআইএমের প্রধান ছিলেন। ২০১৮ সালে মারা যান তিনি। মা ও দাদার সঙ্গেই থাকতো ধ্রুবজ্যোতি।
জানা গিয়েছে, ১৫ বছর আগে তৈরি হয়েছিল এই বাড়িটি। বৃহস্পতিবার প্রথমে তিন তলার ছাদ ভেঙে পড়ে দোতলায়। তারপর দোতালার ছাদ ভেঙে পড়ে একতলায় ঘরে বসে থাকা ধ্রুবজ্যোতির গায়ের উপর। সেই সময় টিভি দেখছিল ধ্রুবজ্যোতি। ঘটনার সময় বাড়িতে একাই ছিল ধ্রুবজ্যোতি। অন্যত্র থাকার জন্য বাড়ি খুঁজতে বেরিয়েছিলেন ধ্রুবজ্যোতির মা ও তাঁর মেজদা।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বাড়ির বেশ কয়েক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছিল। তাই অন্যত্র বাড়ি ভাড়া নিয়ে থেকে এই বাড়ির সংস্কারের বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছিল মণ্ডল পরিবার। কিন্তু ঠিকানা বদলের আগেই একটানা বৃষ্টিতে ঘটল মর্মান্তিক ঘটনা।
বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে আসে বাগুইআটি থানার পুলিশ, দমকল। আসে বিপর্যয় মোকাবিলা দলও। শুরু হয় উদ্ধারকাজ। স্থানীয় বাসিন্দারাও উদ্ধারকাজে হাত লাগান। বাড়ির বিভিন্ন অংশের দেওয়াল মেশিন দিয়ে কাটা হয় কিশোরকে উদ্ধার করার জন্য। ভেঙে পড়া ছাদের অংশ সরিয়ে দেবজ্যোতিকে উদ্ধার করতে প্রায় সাত ঘণ্টা সময় লেগে যায়। ভেঙে পড়ার পরই বাড়ির নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জানা গিয়েছে, লোহার কাঠামো ছিল না বাড়িতে। কাঠের ঝরনার উপর বাঁশের কাঠামো বিছিয়ে এই বাড়ির ছাদ ঢালাই করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। বাড়িটি শুরু থেকেই দুর্বল বলে জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। তার জেরেই এই বাড়ি ভেঙে এই বিপত্তি বলে প্রাথমিক অনুমান।