আরজি কর কাণ্ডে বিচারের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে রাস্তায় নামতে দেখা গেলেও তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক ছিলেন ‘চুপ’। তবে এবার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে দেখা গেল তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। নারী নির্যাতন, ধর্ষণ বিরোধী বিল আনার পাশাপাশি মুখ খুললেন সন্দীপ ঘোষকে নিয়েও।
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। যিনি বরাবরই প্রভাবশালী হিসাবে পরিচিত। যাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে দুর্নীতির গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ। তিনি এতটাই প্রভাবশালী যে তিলোত্তমা পর্বের পর নিজে ইস্তফা দিলেও তা গ্রহণ করেনি সরকার। বরং তাঁকে আবার অন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুনর্বহাল করা হয়েছিল। যদিও বিক্ষোভের জেরে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। সিবিআই এই মামলার তদন্তে নেমে ১২ দিন ধরে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে সন্দীপকে। তাঁর বাড়িতে তল্লাশিও চলেছে। এদিকে সিবিআই দফতরে ঢোকা আর বেরনো এখন সন্দীপের প্রতিদিনের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন। এদিকে তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে গুচ্ছ গুচ্ছ নথি। যাঁকে নিয়ে এত জলঘোলা, সেই সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে অভিষেক বুধবার বলেন, ‘চার দিন কলকাতা পুলিশের হাতে কেস ছিল। ১৪ তারিখ আদালত সিবিআই-এর হাতে কেস দেয়। কেন ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও কেন সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হয়নি, সিবিআই-কে জবাব দিতে হবে।’ সঙ্গে এও জানান, ‘১৪ তারিখ মেয়েদের রাতদখলের ডাক দিয়েছিল। আমরা সম্মান জানাই। যাঁরা প্রতিবাদ করেছিলেন, ধর্ষণমুক্ত সমাজ গড়ার, যাঁরা দোষী, তাঁদের কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি।’
তিলোত্তমার ঘটনার আগেই সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে প্রথম মুখ খুলেছিলেন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। কিন্তু সেই অভিযোগের বিন্দুমাত্র তদন্ত হয়নি, তেমনই দাবি আখতারের। আখতার আলির বদলি হয়েছিল, বহাল তবিয়তে আরজি করেই ছিলেন সন্দীপ। তবে তিলোত্তমা পর্বে সেই দুর্নীতির অভিযোগগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অভিযোগ ডেড বডি থেকে শুরু করে হাসপাতালের বর্জ্য পাচারে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে আরজি করে, আর যাঁর মূল চক্রী হিসাবে নাম উঠে এসেছে সন্দীপের। এমনকি সন্দীপ কতটা প্রভাবশালী, তা বোঝাতে গিয়ে মর্গের প্রাক্তন ডোমও বলেছেন, ‘আরজি করে তো সন্দীপই মুখ্যমন্ত্রী।’ সেই প্রভাবশালী কেন গ্রেফতার হচ্ছেন না, সে প্রশ্ন উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে, আম জনতার মুখে। এবার সে প্রশ্নই তুললেন খোদ শাসক সাংসদ অভিষেক।