রাজনীতিতে কি রাজনীতিকদের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা থাকা দরকার কয়েকমাস আগে এই প্রশ্ন উঠেছিল তৃণমূলের অন্দরে। বয়সের ঊর্ধ্বসীমা থাকা দরকার বলে প্রথম নিজের অভিমত জানিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই মন্তব্যের পরই নবীন-প্রবীণ নিয়ে শোরগোল পড়ে রাজ্যের শাসকদলের অন্দরে। এরপর ফের ধর্মতলায় একুশের জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, তৃণমূলের একই বৃন্তে দুটি কুসুম হল নবীন ও প্রবীণ। নতুনদের নিয়ে পথে নেমে দলকে শক্তিশালী করতে হবে প্রবীণদের।
গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম রাজনীতিতে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা নিয়ে মন্তব্য করেন অভিষেক। তিনি বলেছিলেন, রাজনীতিতে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা থাকা দরকার। তিনি যুক্তি দেন, যে পরিশ্রম একজন পঞ্চাশ বছরের মানুষ কিংবা চল্লিশ বছরের মানুষ করতে পারেন, বয়স বেড়ে গেলে তা করতে পারবেন না। তা নিয়ে শাসকদলের অন্দরে নানা আলোচনা শুরু হয়। লোকসভা ভোটের আগে অভিষেকের ওই মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের প্রবীণ নেতা সৌগত রায় বলেছিলেন, অভিষেক তাঁর কথা বলতে পারেন। তৃণমূলে টিকিট দেবেন মমতা। সৌগতর এই মন্তব্য নিয়ে প্রবীণ নেতাকে খোঁচা দেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। নবীন-প্রবীণ নিয়ে দলে চাপানউতোরের মধ্যে ফের এই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন অভিষেক। রাজনীতিকদের বয়সের ঊর্ধ্বসীমার কথা জানিয়েও তিনি বলেন, প্রবীণদের অভিজ্ঞতা দলের জন্য প্রয়োজন।
লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ফের সংসদে গিয়েছেন সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ নেতারা। রবিবার ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চে তাঁরা উপস্থিত। আর সেই মঞ্চ থেকেই নবীন-প্রবীণ নিয়ে বার্তা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের ভাল ফলের কথা উল্লেখ করে দলকে আরও এগিয়ে যেতে হবে বলে বার্তা দেন তিনি। আর সেই কাজে নবীন-প্রবীণদের হাতে হাত ধরে চলার কথা বললেন। অভিষেক বলেন, “পুরনো যাঁরা আছেন, তাঁদের নতুনদের নিয়ে পথে নেমে দলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। মাঠে নেমে লড়াই করতে হবে। সামঞ্জস্য রেখে কাজ করতে হবে। পুরনোদের অভিজ্ঞতা আর নতুনদের উৎসাহ-উদ্দীপনা। দুটোই তৃণমূলের একই বৃন্তে দুটি কুসুম।” রাজনীতির কারবারিদের একাংশ বলছেন, নবীন-প্রবীণদের নিয়েই যে দল এগিয়ে যাবে, সেই বার্তা স্পষ্ট করে দিলেন অভিষেক।