লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ইস্যুতে বঙ্গ বিজেপিকে  বিঁধলেন অভিষেক

একুশে বিধানসভায় তৃণমূলকে সবথেকে বড় ডিভিডেন্ড দিয়েছিল ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’। সেই মডেল প্রয়োগ করে বাংলা বাদে অন্য রাজ্যে চিঁড়ে না ভিজলেও আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রাম বাংলার উন্নয়ন ছাপিয়ে তৃণমূলের মূল হাতিয়ার সেই ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-ই। এদিকে আবার নিজেদের ভোটব্যাংক শক্ত করতে বিজেপির তরফ থেকে এও দাবি করা হচ্ছে, ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে বরাদ্দ বানান হবে। প্রতি জনসভায় শুভেন্দু অধিকারী থেকে সুকান্ত মজুমদারের মুখে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা দেওয়ার ঘোষণা। বিরোধী দলে এই প্রচারকেই কটাক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের সভা থেকে বিজেপির এই প্রচারকেই অস্ত্র করে নিতে দেখা গেল তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড  অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কেও।  মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে মঙ্গলবার অভিষেক বলেন, ‘একুশের ভোটের আগে বাংলার মা-বোনেদের জন্য তৈরি এই প্রকল্পকে ভিক্ষা বলে আখ্যা দিয়েছিল। এখন নিজেরাই সেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। নিজেরাই বলছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেবে। বিজেপি নেতারা আগে বলত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নাকি ভিক্ষা। এখন বলছে ভোটে জিতলে তারা মহিলাদের হাজার টাকা করে দেবে।’

একইসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ এদিন এও বলেন, ‘দিদি সরাসরি বাংলার মা-বোনেদের অ্যাকাউন্টে যা দিচ্ছেন। মোদি-শাহ আধার প্যান লিঙ্ক করার নামে সেই হাজার টাকা আবার লুঠ করে নিচ্ছে। ১২টা রাজ্যে ক্ষমতায় আছে বিজেপি। এর মধ্যে কোনও একটা বিজেপি শাসিত রাজ্যেও সব মহিলাকে এক হাজার টাকা করে যদি দিতে পারে তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। তৃণমূল কংগ্রেস কথা দিয়ে কথা রাখে। একুশের ভোটে আপনারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে সামনে রেখে ভোট দিয়েছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসেই তা চালু করেছে। আর বিজেপি শুধু কথা দিয়ে পালিয়ে যায়।’

সঙ্গে অভিষেকের কটাক্ষ, ‘সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারী প্রতিযোগিতা করছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে। কে শিরোনামে আসবে, তা নিয়ে লড়াই করছে। সকাল বিকাল খালি মিথ্যা কথা।’ এরই রেশ ধরে এ প্রশ্নও ছুড়ে দেন অভিষেক যে,  ‘আপনার অধিকারের টাকা যে আটকে রেখেছে সে কি আপনাকে অনুদান দেবে?’

শুধু তাই নয়, এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের সভা থেকে নির্দলদের উদ্দেশ্যে কার্যত হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বলেন, ‘অনেক জায়গায় খবর আসছে, আমার কাছে বিভ্রান্তিকর প্রচার চলছে। আম চিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে বলছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদের কথা বিশ্বাস করবেন না। এঁরা দলের কেউ নয়। এরা দলে ফিরবে না কোনও দিন।’

একইসঙ্গে তাঁর সাবধানবাণী, ‘বিজেপি বা নির্দল একটা পঞ্চায়েতে জিতলেই এরা উন্নয়নের কাজ ব্যহত করবে৷ তৃণমূল কংগ্রেস জিতলে অধিকার ফেরত পাবেন। মেদিনীপুর জেলা বিশ্বাসঘাতকদের বিশ্বাস করে না। এটা দার্শনিক, মণীষীদের জেলা। এটা বিপ্লব, আন্দোলনের জেলা। এটা নেতাই, নন্দীগ্রামের জেলা। এই জেলা কারও কাছে বশ্যতা স্বীকার করে না৷ তৃণমূল কংগ্রেসও মাথা নত করবে না দিল্লির বহিরাগতদের কাছে। পঞ্চায়েত ভোটে জিতে আপনাদের ঋণ শোধ করবে।‘

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 2 =