দুবাই গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকালে কলকাতা থেকে দুবাইয়ে রওনা হন তিনি। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, বুধবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ফ্লাই এমিরেটসের বিমানে চেপে দুবাই গিয়েছেন তিনি। সঙ্গে গিয়েছে স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসার কারণেই বিদেশে গিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, এদিন সকাল ৯ টা ২০ মিনিট নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক প্রস্থান গেট ৪এ/৪বি দিয়ে বিমানবন্দরের ভিতরে প্রবেশ করেন অভিষেক। তারপর ফ্লাই এমিরেটসের কলকাতা থেকে দুবাইগামী ইকে-৫৭১ বিমানে চেপে তিনি দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন। উড়ান সংস্থা সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, তিনি বিমানের ১-এ আসনে বসেন।
সুপ্রিম কোর্টে সোমবার কয়লা পাচার মামলার শুনানিতে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদেশ সফরের প্রসঙ্গ ওঠে। কেন অভিষেক-জায়াকে বিদেশে যেতে আটকানো হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ওই দিন মামলার শুনানিতেই কপিল সিব্বল সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিলেন, ২৬ জুলাই অভিষেক চিকিৎসার জন্য দুবাই যেতে চান। ৮ অগাস্ট অভিষেকের চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট রয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। সেই নিয়ে ইডির বক্তব্য জানতে চেয়েছিল শীর্ষ আদালত। তবে জবাব দেওয়ার জন্য কিছুদিন সময় চেয়েছিলেন ইডির আইনজীবী।
এরই প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত সাফ জানায়, কোনও ব্যক্তির বিদেশ গিয়ে গা ঢাকা দেওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে আটকানো উচিত নয়। চিকিৎসার প্রয়োজনে দেশের নাগরিকদের বিদেশ যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। একইসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারির প্রয়োজনীতা নিয়েও ইডিকে প্রশ্ন করে সুপ্রিম কোর্ট। এরপর শীর্ষ আদালতের তরফে সবুজ সংকেত পেয়েই দুবাই সফরে অভিষেক বলে দলীয় সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মুর্শিদাবাদে দলীয় কর্মিসভা থেকে ফেরার পথে সিঙ্গুরের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে-তে ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়েন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গুরুতর আহত হন তিনি। আঘাত লাগে চোখেও। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, তৃণমূল সাংসদের বাঁ চোখের নীচটি প্রায় থেঁতলে গিয়েছিল। চোখ ঠিক করতে একাধিক অস্ত্রোপচারও হয় অভিষেকের। সেসময় চিকিৎসার প্রয়োজনে বিদেশেও যেতে হয় তাঁকে। প্রথমে দুবাইয়ে পরে আমেরিকায় হয় চিকিৎসা। সেখানকার প্রথম সারির হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন অভিষেক। সূত্রের দাবি, চোখের পুরনো আঘাতের চিকিৎসার প্রয়োজনেই গিয়েছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। এর আগে আমেরিকার বাল্টিমোরে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন তিনি।
অন্যদিকে, কুন্তল ঘোষের চিঠির সংক্রান্ত মামলায় ইডির এফআইআর খারিজের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মামলায় সোমবার অর্থাৎ ৩১ জুলাই অবধি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না বলে মৌখিক আশ্বাস দিয়েছে ইডি। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলার শুনানি রয়েছে সোমবার। এর আগে ২৪ জুলাই অবধি রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।