পরিকল্পনা মাফিক ১০০দিনের কাজেও টাকা আত্মসাৎ হয়েছে, দাবি ইডির

পুরসভা ও স্কুলে নিয়োগে দুর্নীতির পাশাপাশি এবার মতোই রাজ্যে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে ‘জব কার্ড’ দুর্নীতির অভিযোগও সামনে এসেছে। যেখানে পরিকল্পনামাফিক টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডির তরফ থেকে। একইসঙ্গে অভিযোগ, ওই আত্মসাতের প্রক্রিয়ায় কমিশনের টোপ দেওয়া হতো ‘জব কার্ড’ হোল্ডারদের। এই প্রসঙ্গে ইডি’র দাবি, একশো দিনের কাজের টাকা হাতাতে বেশ কয়েকটি পন্থা নিয়েছিলেন অভিযুক্তরা। আর এখানেই কমিশনের টোপ দিয়ে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি উঠে আসছে।

ইডির তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, কমিশনের টোপ দিয়ে একশো দিনের জব কার্ডে নাম তোলানো হতো পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁদের সঙ্গে অভিযুক্তদের চুক্তি থাকত, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা ঢুকলে তার কত শতাংশ দিতে হবে। অভিযোগ, ২০ থেকে ৫০ শতাংশ কমিশন দিতে হতো একাংশ জব কার্ড হোল্ডারকে। এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। গ্রামবাসীদের জব কার্ডে নাম তোলা থেকে দুর্নীতি শুরু হতো। যাঁরা পঞ্চায়েত সদস্যদের ঘনিষ্ঠ হতেন, তাঁরা একশো দিনের কাজে অগ্রাধিকার পেতেন। আর যাঁদের কাজের প্রয়োজন সত্যিই, বাস্তবে তাঁরাই বেশি বঞ্চিত হতেন। আর এখানেই ইডির তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, নিচুতলা থেকে শুরু করে সরকারি আধিকারিকরাও এই দুর্নীতিতে যুক্ত। তাঁরাও টাকার ভাগ পেয়েছেন। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে আরও তথ্য মিলতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

এই প্রসঙ্গেই ইডির তরফ থেকে অনুমান করা হচ্ছে পঞ্চায়েত সদস্য এবং সরকারি আধিকারিকদেরও একাংশ এই দুর্নীতিতে যুক্ত। তবে এ বিষয়ে আরও তথ্য পেতে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বহরমপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্চয়ন পানকে তলব করা হয়েছে। ওই দিনই আসতে বলা হয়েছে চন্দননগরের নির্মাণ-সহায়ক কর্মী সন্দীপ সাধুখাঁকেও। পরবর্তী পর্যায়ে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি তলব করা হয়েছে ঝাড়গ্রামের সংখ্যালঘু দপ্তরের আধিকারিক শুভ্রাংশু মণ্ডলকেও।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার কলকাতা, হুগলি, ঝাড়গ্রাম এবং মুর্শিদাবাদে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার করেছিল ইডি। সেই সব নথি খতিয়ে দেখার পর সন্দেহের তালিকায় থাকা অভিযুক্তদের একে একে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শুরু করতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তসংস্থা। তারা মনে করছে, শিক্ষাক্ষেত্রে এবং পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির মতো একশো দিনের ‘জব কার্ড’ দুর্নীতিও আটঘাট বেঁধে করা হয়। এদিকে ইডি’র তদন্ত শুরুর আগে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা এবং হুগলির ধনেখালিতে ৫টি এফআইআর রুজু হয়েছিল। তার ভিত্তিতে তদন্তও শুরু হয়েছিল। এমনকী তদন্তে নেমেছিল সিআইডি’র ইকনমিক অফেন্স উইংও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 3 =