কসবা ধর্ষণকাণ্ডে বিস্ফোরক অভিযোগ অভিযুক্তের আইনজীবীর

কসবা কাণ্ডে গ্রেফতারির পর হেফাজতের মেয়াদ শেষ হতেই ফের তিন অভিযুক্তকে মঙ্গলবার আদালতে তোলে পুলিশ। তবে আশ্চর্যের ঘটনা,  শুনানি শুরু হলেও মূল অভিযুক্ত আর ঘটনায় গ্রেফতার তাঁর অনুগামীর আইনজীবী মক্কেলদের জন্য জামিনের আবেদনই করলেন না। বিচারকের সামনে তাঁদের স্পষ্ট কথা, তদন্তে সহযোগিতার জন্যই তাঁরা জামিন চাইছেন না। তবে জেরার সময় আইনজীবী দেওয়ার আবেদন জানান তাঁরা।একইসঙ্গে তাঁরা আর্জি জানান , আইনজীবীকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে দেওয়ারও।

তবে এদিন তাঁরা করেন বিস্ফোরক অভিযোগ। স্পষ্ট বলছেন, এটা একটা ষড়যন্ত্র। এফআইআর পড়লে মনে হয় না এটা গণধর্ষণ। নির্যাতিতার মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কিনা সেই প্রশ্নও তুলেছেন। যদি হয়ে থাকে তাহলে তাঁর মোবাইল ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে কি না তাও জানতে চান অভিযুক্তদের আইনজীবী। পাশাপাশি জানতে চান, সবার কল ডিটেইলস নেওয়া হয়েছে কি না তাও।

যদিও ঘটনাক্রম ধরে ধরে পাল্টা প্রশ্ন তোলেন সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল। তিনি জানান,  আমরা আবার ঘটনাস্থলে যাব। মেডিক্যাল এভিডেন্স, ডিজিটাল এভিডেন্স ও পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। সব তথ্যপ্রমাণ মিলেও যাচ্ছে। অভিযোগ, কলেজে যে সময় ওই তরুণীকে নির্যাতন করা হচ্ছিল তখন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অভিযোগ, সেই সময় তিন অভিযুক্তের মধ্যে একজন কলেজের পাশেই ওষুধের দোকান থেকে একটি ইনহেলার কিনে আনেন। সেটা নির্যাতিতাকে দেওয়ার পর শুরু ধর্ষণ। এদিন সেই প্রসঙ্গও তোলেন সরকারি আইনজীবী। ওদিন আদালতে সওয়ালজবাবের সময় তিনি বলেন, ইনহেলারটা নিয়ে এসে দেওয়া হল, উদ্দেশ্যটা কি? একবার অত্যাচারের পর যখন অসুস্থ হয়ে পড়ল, তখন তাঁকে ইনহেলার এনে সুস্থ করা হয়। নির্যাতিতা সুস্থ হলে যাতে আবার অত্যাচার করা যায় সেই জন্যই ইনহেলার আনা হয়েছিল। মানে অত্যাচার করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল।’ এরপরই তিনি ধৃতদের ১০ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর আবেদন করেন। আদালতে বিস্ফোরক দাবি করে পুলিশও। তাঁদেরও দাবি, নির্যাতিতাকে সুস্থ করার জন্য নয়।সুস্থ অবস্থায় অত্যাচার করতেই দেওয়া হয়েছিল ইনহেলার।

অন্যদিকে এ ঘটনায় এক নিরাপত্তারক্ষীকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে তাঁর আইনজীবীও জামিনের আবেদন করেননি। তাঁর দাবি, রক্ষীর ক্ষমতা সীমিত। তাঁর ভূমিকা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত আদেশ দিক আদালত। শেষ পর্যন্ত ৮ জুলাই মূল অভিযুক্তসহ তিনজনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ আলিপুর আদালতের। ৪ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে নিরাপত্তারক্ষী। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 4 =