রূপকথাকে বাস্তব করল আফগানরা

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ হিসেবে ক্রিকেটে আফগানিস্তানের উত্থান রূপকথার চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। আফগানিস্তানকে আর কোনও ভাবেই ক্রিকেটের ছোটদেশ বলা যাবে না। আফগানরা বুঝিয়ে দিলেন যে, তাঁদের ক্রিকেট সাধনা ও অধ্য়াবশায়কে কোনও শক্তিই টলাতে পারেনি। তাঁরা নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল। সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে অবস্থিত আর্নস ভেল গ্রাউন্ডে বাংলাদেশকে ৮ রানে হারিয়ে আফগানিস্তান চলে গেল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্য়াচের ফয়সলা হয়েছে ডিএলএস নিয়মে। আফগানদের জয়ের সঙ্গেই অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ থেকে ছুটি হয়ে গেল। এই অস্ট্রেলিয়াকেই আগের ম্য়াচে হারিয়ে ইতিহাস লিখেছিলেন রশিদরা। কাবুল থেকে কান্দাহার, জালালাবাদ থেকে গজনি। আফগানিস্তান মেতেছে আজ সেলিব্রেশনে। হাসি-কান্না মিশেছে এক অন্য় স্বাধীনতার আনন্দে। কাঁদছেন আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা।

তবে এদিনের ম্যাচের প্রথম থেকেই যে ভাবে রক্তচাপ বাড়ছিল তিন দলের তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। বোর্ডে অল্প রান। অন্যদিকে বৃষ্টির জন্য বারবার বাধা। একদিকে বাংলাদেশের লিটন দাসের অনব্য ইনিংস তো অন্যদিকে রশিদ কান, নবীন উল হক, নূর আহমেদদের দুর্দান্ত বোলিং। তবে খারাপ ফিল্ডিংয়ের জন্য চাপেও পড়তে দেখা গেছে আফগানদের। শেষপর্যন্ত ডিএলএস-এ ৮ রানে জয়ের সুবাদে প্রথমবার বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে আফগানরা। শেষ চারে তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা।

আর এই ঐতিহাসিক দিনে রশিদও নিজের নাম লিখিয়ে ফেললেন সোনালি ইতিহাসে। অবিস্মরণীয় মাইলস্টোন গড়লেন তিনি। এই মুহূর্তে পুরুষদের আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্য়াচে সবচেয়ে বেশিবার চার উইকেট নেওয়ার রেকর্ড রশিদের। ২৫ বছরের বিশ্ববন্দিত লেগস্পিনার ছাপিয়ে গেলেন বিপক্ষ দলের মহারথী সাকিব আল হাসানকে। সাকিব এখনও পর্যন্ত পুরুষদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৮ বার চার উইকেট নিয়েছেন। রশিদের সেই সংখ্য়া হয়ে গেল ৯। উগান্ডার হেনরি সেনইয়োন্ডো রয়েছেন তিনে। রেকর্ডের বিচারে তাঁর ক্রমিকসংখ্য়া ৭। রশিদরা এদিন প্রথমে ব্য়াট করে ৫ উইকেটে ১১৫ রান তুলেছিলেন। জবাবে ১৭.৫ ওভারে তোলে ১০৫ রান। রশিদ চার ওভার বল করে চার উইকেট নিয়েছেন মাত্র ২৩ রান দিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 4 =