ইডির হাতে শঙ্কর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গ্রেফতার হতেই সামনে এল অসুস্থতার প্রসঙ্গ

গ্রেফতার হতে না হতেই বিশ্বজিতের আইনজীবীর গলাতে শোনা গেল অসুস্থতার তত্ত্ব।  বুধবার যখন বিশ্বজিৎ দাসকে বিশেষ ইডি আদালতে পেশ করা হয়, তখন অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ইডির আইনজীবীর যুক্তি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে বিশ্বজিতের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। সেই কারণে আরও তথ্য সংগ্রহ করতে বিশ্বজিতকে আট দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় ইডি। সেই সময়েই বিশ্বজিৎ দাসের আইনজীবী জানান, একাধিক রোগ রয়েছে তাঁর মক্কেলের। ফলে তাঁর যেন সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হয়, সেই বিষয়টি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। একইসঙ্গে আদালতের কাছে আইনজীবীর আরও আর্জি, ইডি হেফাজতে যেন অত্যাচার না করা হয় তাঁর মক্কেলকে। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত বিশ্বজিৎ দাসের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন বুধবার বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস।  এই নিয়ে রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হলেন মোট চারজন। মঙ্গলবার থেকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্তে অসহযোগিতা এবং বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকার জেরে গ্রেফতার করা হয় ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাসকে, এমনটাই জানানো হয়েছে ইডির তরফ থেকে। এদিকে ইডি সূত্রে এ খবরও মিলছে যে, তল্লাশি চলাকালীন ধৃত বিশ্বজিতের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ হাওয়ালা সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকেই রেশন দুর্নীতির তদন্তে নামে ইডি। ইডি সূত্রে এও জানানো হয়েছে, মূলত, শঙ্কর আঢ্য ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বিশ্বজিতের নাম জানতে পারেন ইডি আধিকারিকরা। সেই মতো তাঁরা মঙ্গলবার পৌঁছে যান বিশ্বজিতের সল্টলেকের আইবি ব্লক-এর বাড়িতে। ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে তল্লাশি অভিযান। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ওই ব্যবসায়ীকে। এদিকে গোয়েন্দা আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, শঙ্কর ঘনিষ্ঠ বিশ্বজিতের বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার ব্যবসা রয়েছে, সোনার ব্যবসা রয়েছে, এছাড়াও এক্সপোর্ট ইমপোর্ট সংস্থা রয়েছে। ইডি-র সন্দেহ এই সংস্থার মাধ্যমেই বিপুল পরিমাণ রেশন দুর্নীতির টাকা পাচার হয়েছে বিদেশে।

সূত্রের খবর, যে সময় তল্লাশি চলছিল সেই সময় এই ব্যবসায়ী বাড়িতে ছিলেন না। সূত্রে খবর, তিনি ছিলেন বাংলাদেশে। এরপর ইডির অফিসাররা মঙ্গলবারই বিশ্বজিতকে ফোন করেন এবং তারপর রাতেই বিমানে কলকাতায় ফেরেন বিশ্বজিৎ। এরপর বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বিশ্বজিৎকে। বিমান বন্দর থেকে কার্যত তাঁকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এরপরই গ্রেফতার হন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 + 7 =