টোকিও গেমসের অ্যাকশন রিপ্লে। কারণ, হার্দিক আর হরমনপ্রীতের জুটি। হার্দিক থাকলে হরমনপ্রীত আছেন। হরমনপ্রীত থাকলে আছে গোল। এই জুটিই অলিম্পিক হকি থেকে ভারতের আর একটা ব্রোঞ্জ পদক আনার আসল রেসিপি। হকিতে ইনজেক্টরের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পেনাল্টি কর্নার পেলেই হার্দিক চোখের পলকে ইনজেক্ট করেন। তা ধরেই গোল করেন ভারতের ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীত। এবারের অলিম্পিকে ১১টা গোল করলেন হরমনপ্রীত। যার অধিকাংশই এসেছে হার্দিকের ইনজেক্ট থেকে।
আর একজনের কথা না বললে চরম অন্যায় করা হবে। তিনি হলেন পারাত্তু রবিচন্দ্রন শ্রীজেশ। ভারতের সাফল্যের অন্যতম কারণ। নির্দ্বিধায় বাঁচিয়ে চলেছেন একে পর গোল, পি-সি। ভারতকে ম্যাচের পর ম্যাচ বিপদসীমা পার করে এগিয়ে নিয়ে গেলেন পদকের দিকে। জীবনের শেষ ম্যাচ খেললেন, কে বলবে। মনে হল মধ্য পঁচিশে রয়েছেন। জাতীয় টিমের হয়ে সবে সেঞ্চুরি ম্যাচ পার করেছেন। অভিজ্ঞতায় ভরপুর, তারুণ্যেও।
এতেও সবকিছু বলা হল না। মাঝমাঠে মনপ্রীত সিংয়ের খেলা যেন ফুল ফোটালেন এদিন।খেলা তৈরি থেকে, বিপক্ষের বক্সে পেনিট্রেট করা, তরুণদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া, ‘আমি আছি তো’ বলার মতো বিরল লোক যে খুব একটা পাওয়া যায় না। শ্রীজেশের মতো মনপ্রীতও খেলে ফেললেন জীবনের শেষ ম্যাচ। সোনার লক্ষ্য ছিল। ব্রোঞ্জেও তো সোনালি বিদায় নেওয়া যায়!
ভারতের এই হকি টিম স্বপ্ন দেখানোর মতো। অলিম্পিকের আগে পুরো বছরটাতেই সে ভাবে খেলতে পারেনি ভারত। যা উদ্বেগে রেখেছিল হকি ভক্তদের। কিন্তু অভিষেক, গুরজন্ত, বিবেক, সুখজিৎ, জার্মানপ্রীতদের মতো তারকারা, যাঁদের হাতে আগামী দিনে থাকবে ভারতের দায়িত্ব, তাঁরা কিন্তু অলিম্পিকে সেরাটাই দিয়েছেন। পুরো টুর্নামেন্ট ধরলে একমাত্র জার্মানি ম্যাচেই হোঁচট খেয়েছিল ভারত। বোধহয় সোনার লক্ষ্য রেখে নিজেদের উপর চাপ বাড়িয়ে ফেলেছিলেন তরুণ প্লেয়াররা। তারই ছাপ পড়েছে। কিন্তু ক্রেগ ফুলটনের টিম ওই হারের পর কান্নায় ভেঙে পড়লেও আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সেটাই দরকার ছিল। ব্রোঞ্জ হলেও তো পদক।