আইআইএম কলকাতার ধর্ষণ মামলায় জামিন মঞ্জুর করল আলিপুর আদালত। ৫০,০০০ টাকার বিনিময়ে শনিবার জামিন মঞ্জুর করা হয়।এর মধ্যে ২৫,০০০ টাকা নগদ এবং ২৫,০০০ টাকা ব্যক্তিগত বন্ড হিসেবে জমা দিতে হয় অভিযুক্তকে। অভিযুক্তের আইনজীবী সুব্রত সর্দার আদালতে দাবি করেন, অভিযোগকারিণী গোটা তদন্ত ও এফআইআরের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি আরও বলেন, ’১১ জুলাই ঘটনার পর এখনও পর্যন্ত কোনও মেডিকো–লিগ্যাল পরীক্ষা হয়নি। তদন্তের গাফিলতি স্পষ্ট। একজন মেধাবী এমবিএ ছাত্রের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।’ একইসঙ্গে তিনি এও জানান, ‘জামিনের আবেদন করছি। এফআইআর কপি দেখুন। নির্যাতিতাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি একজন মনোবিদ। সমাজমাধ্যমে পরিচয় হওয়ার পরে কাউন্সেলিং করাতে যান। এফআইআর শেষ হওয়ার পরেও রিটেন কমপ্লেন রয়েছে। জোকা আইআইএম কোনও সাধারণ প্রতিষ্ঠান নয়, সেখানে যে কেউ ঢুকতে পারে না চাইলেই যাবে। এখানে ঢোকা বা বেরনোর কিছু গাইডলাইন রয়েছে। ডিজিটাল আইডেন্টিফিকেশন আইকার্ড দিতে হয়, তারপর ক্যাম্পাসে যেতে দেয়। ওখানে বহু হস্টেল রয়েছে, সেখানে ওয়ার্ডেন থাকেন। সেখানেও রিজন শো করতে হয়। সেখানে অনুমতি মিললে তবেই ভিতরে যেতে দেওয়া হয়। ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’র মতো কেউ যেতে পারে না।’ এখানেই শেষ নয়, অভিযুক্তের আইনজীবী এও বলেন, ‘অসুস্থ হলে বর্ডার বা কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে ডাক্তার আসতে পারে। সাইকোলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট করতে গেলেও অনুমতি নিতে হয়। প্রথম লাইনটা দেখুন ভিকটিম ১১. ৪৫ এ ঢুকল। ২০.৩৫ বেরল। গেট এন্ট্রি কীভাবে হল সেটাও স্পষ্ট নয়। জোকা থেকে ৪.৫ কিমি দূরে, ওই সময়ে কীভাবে থানায় পৌঁছল অভিযোগকারী, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এরপর থেকে বারে বারে নির্যাতিতাকে ডাকা হয়, কিন্তু তিনি আসেননি। কেন আসেননি, তা তদন্তকারী অফিসার নির্দিষ্ট কারণ জানাননি। ১৩ তারিখের পর ফের ১৫ তারিখ সময় দেওয়া হল, ওইদিনও আসেনি। ১৬ তারিখও আনা গেল না। ট্রমায় রয়েছেন কিনা, অসুস্থ কিনা কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। ১৮ তারিখ সময় দেওয়া হলেও আসেনি। এরপর মেডিকো লিগ্যাল করতে গেলে সময় দেওয়া হয়। ১১ তারিখ ঘটনা ঘটেছিল। আজ পর্যন্ত তা হয়নি। সিডিতেও কোনও প্রমাণ নেই। ব্লাড স্যাম্পল, হোটেল থেকে সিজ, মেডিকো লিগ্যাল টেস্ট হয়েছে। সেখানেও অসহযোগিতার কথা বলা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে কী উঠে এসেছে তা প্রয়োজনীয়। জেল হেফাজতের আবেদন করা হয়েছে। ডেট এর পর ডেট নিয়ে চলে যাচ্ছে। ঘোস্ট কমপ্লেনেন্ট।’ একইসঙ্গে অভিযুক্তের আইনজীবী এও দাবি করেন, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তিনি উচ্চ শিক্ষিত। এতে আর্টিকেল ২১ ক্ষুন্ন হয়েছে। মেয়েটির বাবাও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। হাতে লেখা অভিযোগপত্র দেখুন প্লেস অফ অকারেনস ও পেনিট্রেটিভ লেখা আছে। অভিযুক্ত প্রভাবশালী নন। কর্নাটকে মিডল ক্লাস ফ্যামিলির ছেলে। ফলে তার এই টানাপড়েনে সমস্যা হচ্ছে নানা ধরনের, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন।
এদিকে বিপক্ষের আইনজীবীর দাবি, তদন্তেই থাকব। সরকারি ডাক্তারের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাইমারি মেডিক্যাল হয়েছে। সিজার লিষ্ট রয়েছে। এমার্জেন্সি টিকিট অনুযায়ী মেডিক্যাল হয়েছে ১২ তারিখ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সিজ হয়েছে। অভিযোগকারী কখন ঢুকেছেন, রেজিস্টার সিজ হয়েছে। তিনি ট্রমাটাইজ, মিডিয়া ফেজ করতে চাইছে না। যদিও অভিযুক্তের আইনজীবী সয়াল করেন, প্রাথমিক মেডিক্যাল রিপোর্টে কিছু হয় না। পুলিশ ব্যর্থ। মেডিকো লিগ্যাল হয়নি। কোনও জায়গায় যদি রেপ বা অ্যাসল্ট হয় তখন তো অভিযুক্তকে ধরা হবে। ফলে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিন।