মিড-ডে মিলে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠল রাজ্যের বিরুদ্ধে। সামনে এল যৌথ কমিটির বিস্ফোরক রিপোর্ট।সূত্রের খবর, শিক্ষামন্ত্রকের কাছে ইতিমধ্যেই সেই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। ফলে লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধীদের হাতে এল আরও এক নতুন অস্ত্র।আর এতে যে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নতুন করে শাসকদলকে বিদ্ধ করবেন এটাই স্বাভাবিক।
সূত্রের খবর, রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, ১৬ কোটির মিড ডে মিলে দুর্নীতি হয়েছে। ১০০ কোটি টাকার গরমিলের অভিযোগ। জেলা থেকে আসা রিপোর্টের সঙ্গে কেন্দ্রের রিপোর্টও মিলছে না বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। অভিযোগ, অতিরিক্ত পড়ুয়া দেখানো হচ্ছে রাজ্যের তরফে। শুধু তাই নয়, পড়ুয়া উপস্থিতির হারও বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে।
এবার কেন্দ্রের তরফ যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তা রীতিমতো চমকে ওঠার মতন। শিক্ষা, রেশন, চাকরি, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোতে যে দুর্নীতির খবর সামনে এসেছে, সে অধ্যায়ে নবতম সংযোজন মিড ডে মিল। রিপোর্ট কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকে জমা পড়েছে। তাতে উল্লেখ রয়েছে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে বেনিয়ম ধরা পড়েছে। যত সংখ্যক উপস্থিতির হার দেখানো হয়েছে, তার থেকে কম রয়েছে উপস্থিতি। কর্মদিবসের হারেরও গরমিল। সেখানেও বেশি করে দেখানোর কথা রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। ১৬ কোটি মিড ডে অতিরিক্ত ‘এস্টিমেশনে’ চলে গিয়েছে।এই মিড-ডে মিলের দাম ১০০ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই ক্যাগকে এব্যাপারে তদন্ত করার কথা বলা হয়েছে। এবার সিবিআই-কেও মিড ডে মিল দুর্নীতিতে তদন্তের সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক।
এরপরই শুক্রবার কৃষ্ণনগরে যান দলীয় কর্মসূচিতে যান শুভেন্দু অধিকারী। সেই মঞ্চ থেকে মিড ডে মিলের দুর্নীতি প্রসঙ্গে সরব হন তিনি। বলেন, ‘মিড ডে মিলে সিবিআই হয়ে গিয়েছে। আমি এক বছর লেগেছিলাম। এবার বিডিও-ডিএমরা কোথায় যাবেন?’ এরপরই এক্স হ্যান্ডলে শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু লেখেন, ‘আমরা যে কোনও প্রকল্পে যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। তবে ‘এজেন্সি পলিটিক্স’ লজ্জার।’ একইসঙ্গে ব্রাত্যর সংযোজন, ‘১৩ তম জেআরএমের একমাত্র প্রতিনিধির রিপোর্ট খুব তাড়াহুড়ো করে জমা দেওয়া হয়েছিল। যেখানে ১০০ কোটির ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যৌথ পর্যালোচনা মিশনকে (জেআরএম) কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের দেওয়া রিপোর্টে ১০০ কোটি টাকা গরমিলের উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে সই নেই রাজ্যের প্রতিনিধির। দুর্নীতি নয়, সাশ্রয় হয়েছে ওই প্রকল্পে। ১৮.৮ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে রাজ্য সরকার।’
এদিকে কখনও সাপ, কখনও বাঙ কিংবা টিকটিকি। প্রত্যন্ত গ্রামে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের বাচ্চাগুলো যখন দুপুরের খাবারটা মুখে তুলতে বসে, তখন তাতে দেখতে পায় ঝলসে যাওয়া টিকটিকি, সাপ-ব্যাঙদের। অনেকে খেয়েও ফেলে, অসুস্থও হয়। মিড ডে মিলে এভাবে সরীসৃপদের ঝলসানো দেহ পাওয়া গত কয়েক মাসে কার্যত নিত্য নৈমিত্তিক খবর হয়ে দাঁড়ায়। এই সব ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস মিললেও চিত্রপট যে খুব একটা বদলেছিল তাও বলা যায় না।