চার্চে ঢুকে গুণ্ডাগিরির অভিযোগ শাসকদলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে

চার্চে ঢুকে দাদাগিরির অভিযোগ এবার শাসকদলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল খাস কলকাতা। সরাসরি কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে গুণ্ডাগিরির অভিযোগ আনলেন বিশপ। চাইলেন পুলিশি নিরাপত্তা। সূত্রে খবর, এই ঘটনায় চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকেও। ডায়োসিস অব কলকাতা চার্চ কর্তৃপক্ষের অধীনে রয়েছে অক্সফোর্ড মিশন চার্চ। যা বেহালার ডায়মন্ড হারবার রোডের উপরে বড়িশায় অবস্থিত। অভিযোগ, সেই চার্চের সম্পত্তিতে ঢুকে তৃণমূল কাউন্সিলরের অনুগামীরা গুণ্ডাগিরি করে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করেন ডায়োসিস অব কলকাতা চার্চ কর্তৃপক্ষ। খোদ কলকাতার বিশপ রেভারেন্ড পরিতোষ ক্যানিং এ নিয়ে সরব হন। চিঠি লেখেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকেও।

কলকাতা পুরসভার ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ১৬ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুদীপ পোল্লে এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়া, প্রাণে মারার হুমকি, ভয় দেখানোর-সহ একাধিক অভিযোগ করেন বিশপ। চিঠিতে এও জানানো হয়েছে, প্রায় ২০০ বছরের কাছাকাছি এই চার্চের অধীনে রয়েছে সিস্টার ফ্লোরেন্স কলেজ অব নার্সিং। অর্থাৎ মেয়েদের নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সেখানে ঢুকে তৃণমূল কর্মীরা কাউন্সিলরের নাম করে রীতিমতো হুমকি দিয়েছে। মেয়েদের কলেজ হওয়া সত্ত্বেও যখন খুশি ঢুকে পড়ছে তারা। সেই কলেজের ভিতরে একাধিক বিল্ডিং রয়েছে, যেগুলিতে ফাটল ধরে একাকার অবস্থা। অক্সফোর্ড মিশনের তরফে সেগুলির মেরামতির অনুমতি চেয়ে বরো অফিসে চিঠি পাঠানো হলেও তাতে অনুমোদন আসেনি। এমনকী কাউন্সিলরের অনুগামীরা এসে কোনও কাজ করতে নিষেধ করে গিয়েছেন। যে ঠিকাদাররা কাজ করছিলেন, তাঁদের রীতিমত হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে অক্সফোর্ড মিশনের ভিতরে চার্চের সম্পত্তির একটি রাস্তা এবং মাঠ রয়েছে। যেখানে প্রাতঃভ্রমণকারীরা নিয়মিত আসতেন। কিন্তু প্রাতঃভ্রমণকারীদের অনেকেই এসে চার্চের ভিতরে নানান অপ্রীতিকর কাজ করতেন বলে চার্চ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। যে কারণে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। তখনই আসরে নামেন এলাকার কাউন্সিলর বলে অভিযোগ। ওই মিশনের মাঠের দরজা কোনওভাবেই বন্ধ রাখা যাবে না বলে বিশপকে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হয়। তবে চার্চ কর্তৃপক্ষ সেটা মেনে না নেওয়ায় রীতিমতো হুমকি উড়ে আসতে থাকে। আর চার্চ সেই অনুমতি না দেওয়ায় প্রভাব পড়ে পার্শ্ববর্তী ওই নার্সিং কলেজের কাজে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় আতঙ্কিত চার্চ কর্তৃপক্ষ এবং ওই নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পড়ুয়ারা।

এদিকে এই ঘটনায় কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যানের তরফে বলা হয়েছে, চার্চের মধ্যে বেআইনিভাবে নির্মাণ চলছে। জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। নোটিস দেওয়া হয়েছে পুরনিগমের তরফে। পুরনিগমের তরফে আইনি কাজ করা হয়েছে। কোনওরকম হুমকি দেওয়া হয়নি। এই প্রসঙ্গে কাউন্সিলর সুদীপ পোল্লে জানান, ‘বেআইনি কাজ হচ্ছে আমি অভিযোগ করেছি। পুরনিগম দেখবে আইনি হচ্ছে নাকি বেআইনি।’ যদিও বিজেপি নেতা সজল ঘোষের কথায়, ‘এদের কাউন্সিলর কেউ পোপকে দেখে নেবেন, কেউ বিশপকে দেখে নেবেন। কেউ জেসিবি কেউ জয়ন্ত কেউ শাহজাহান। এসব না করলে ওদের কি চলে? নিজেকে আজকাল কাউন্সিলর বলতেও লজ্জা করে।’ অন্যদিকে সিপিএম নেতা চয়ন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘এসব তৃণমূলের অভ্যাস।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − one =