নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্য জুড়ে নানা চাপানউতোরের মধ্যেই শেষ হল উচ্চপ্রাথমিকের কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া। এরপর ১৩ হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থীরা কে কোন স্কুলে চাকরি পাচ্ছেন সেই বিষয়টি এখন ঝুলে রয়েছে আদালতের রায়ের ওপরেই। তবে এটাও ঠিক, স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে লাগাতার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাঁদের কাছে সুষ্ঠভাবে এই কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া শেষ করা যে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল তা আর বলার অপেক্ষা ছিল না। তবে এদিন চাকরিপ্রার্থীদের জন্য খুশির এক খবরও দেন এসএসসির চেয়ারম্য়ান। অনুপস্থিতি ও চাকরি পেয়েও গ্রামের স্কুলে চাকরিতে যোগ না দেওয়ার জেরে এ বার ওয়েটিং লিস্ট থেকে ২০০০-এরও বেশি চাকরিপ্রার্থী ডাক পেতে চলেছেন, এদিন এমনটাই ইঙ্গিত দিতে দেখা যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে। এই প্রসঙ্গে তিনি এও জানান, উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ১ হাজার ২৫ জন চাকরিপ্রার্থী অনুপস্থিত, ৯২ জন হবু শিক্ষক গ্রামে স্কুল থাকায় চাকরি নিলেন না। এর জেরে এক সপ্তাহের মধ্যেই দ্বিতীয় পর্যায়ের বিজ্ঞপ্তি দেবে স্কুল সার্ভিস কমিশন। ‘আমাদের এক সপ্তাহ সময় দিতে হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাউন্সিলিং শুরু করার জন্য।’
গত ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল উচ্চ প্রাথমিকের কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া। তবে এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের দাবি, সবই ঠিকঠাক হয়েছে। পাশাপাশি তিনি এও জানান, চাকরিপ্রার্থীদের উপস্থিতির হার নিয়েও বেশ খুশি তিনি।তবে ১২ শতাংশ মতো প্রার্থী অনুপস্থিত ছিলেন এই কাউন্সেলিংয়ে। ১ শতাংশ মতো প্রার্থী চাকরি করতে চাননি। তবে এদিনের কাউন্সিলিংয় প্রক্রিয়া শেষ হলেই পুরো হিসাবটা বোঝা সম্ভব হবে বলে মত তাঁর। অন্যদিকে অনেক শিক্ষকই আবার গ্রামের স্কুলে শিক্ষকতা করতে চাইছিলেন না বলেও শোনা যাচ্ছিল। যা নিয়ে চলছিল চাপানউতোর। এই প্রসঙ্গে এসএসসি চেয়ারম্যানের বক্তব্য, ‘এই তথ্য ঠিক নয়। কারণ, যারা চাকরি করতে চাইছেন না তাঁরা যে গ্রামে পোস্টিং বলে যেতে চাইছেন না এমনটা নয়। এরকম কোনও তথ্য একজনের মুখেও শোনা যায়নি। অনেকের বাড়ি থেকে দূরে বলে তিনি যেতে চাইছেন না, কিন্তু গ্রাম বলে যেতে চাইছেন না এমনটা নয়।’ পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন, ‘চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া খুবই ভাল।প্রার্থীদের যাতে তথ্য পেতে কোনও অসুবিধা না হয় সেদিকটা আমরা সবসময় খেয়াল রেখেছি। আগে থেকেই দেওয়া ছিল চাকরির বিশদ বিবরণ। গোটা প্রক্রিয়া খুব সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি ওরা খুশি।’
তাহলে শেষ পর্যন্ত কবে কাজে যোগ দেবেন নতুন শিক্ষকরা সে ব্যাপারে পুরোটাই নির্ভর করছে আদালতের রায়ের ওপর এদিন তাও জানাতে ভুললেন না এসএসসির চেয়ারম্যান। সঙ্গে এও জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়ার এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় গেলে কাজে যোগ দিতে শিক্ষকদের আরও এক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “এখন তো শুনানি চলছে। শুনানি শেষে যদি মহামান্য আদালত সুপারিশপত্র দেওয়ার অনুমতি দেন তাহলে বোঝা যাবে জট অবশেষে কাটল। তারপর ওনারা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পাবেন। তারপর কাজে যোদ দেবেন।’