বড় সমস্যায় অনুব্রত কন্য়া সুকন্যা এবং অনুব্রত। কারণ, তাঁদের হয়ে যে আইনজীবী অমিত কুমার মামলা লড়ছিলেন তিনি আর মামলা লড়বেন না বলেই জানিয়েছেন অনুব্রত কন্যাকে, অন্তত এমনটাই সূত্রে খবর। এদিকে গরু পাচার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার মামলায় প্রথমে অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইডিও। আবার কয়েক মাস পর গ্রেপ্তার করা হয় অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকেও। বাবার গ্রেপ্তারির ৮ মাস পর গত এপ্রিল মাসে গ্রেপ্তার করা হয় সুকন্যাকে। সুকন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তিনি নানাভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। কারণ,অনুব্রত মণ্ডলের হিসাব রক্ষক মণীশ কোঠারিকে জেরা করে সুকন্যা মণ্ডল সম্পর্কে নানা তথ্য় পাওয়া যায়। এরপরই তাঁকে দিল্লিতে তলব করে ইডি। তাঁকে অন্তত তিনবার জেরা করার জন্য় তলব করা হয়। কিন্তু প্রতিবারই হাজিরা এড়িয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এদিকে ইডির কাছে সুকন্য়া সংক্রান্ত নানাবিধ বেনিয়মের খবর আসছিল। যার জেরে সুকন্যাকে ফের গত এপ্রিল মাসে দিল্লিতে ইডির দপ্তরে তলব করা হয়েছিল।কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি দিকভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন ইডি-র আধিকারিকদের। বারবার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যাচ্ছিলেন বলেও অভিযোগ। অবশেষে তাঁকে গ্রেপ্তার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ফলে বর্তমানে দুজনেই বন্দি দিল্লির তিহার জেলে। তবে এবার তাঁদের মধ্যে শুরু হয়েছে’মতবিরোধ’। আর তারই জেরে মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন সুকন্যা মণ্ডলের আইনজীবী অমিত কুমার। সূত্রের খবর, আইনজীবী অমিত কুমার আর মামলা লড়তে চান না বলে ইতিমধ্যেই অনুব্রত কন্যাকে জানিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে গ্রেফতারের পর থেকে বারংবার খারিজ হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদন। সদ্য সুকন্যা মণ্ডলের জামিনের আবেদনও খারিজ করেছে আদালত। সুকন্যা মণ্ডলের আইনজীবী দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে তাঁর জামিনের জন্য আবেদন করেন। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন ইডির আইনজীবী আদালতে বলেন,অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি জানিয়েছেন,সুকন্যা ব্যবসার দেখাশোনা করতেন এবং তাঁকেও নির্দেশ দিতেন। ইডির আইনজীবী আরও জানান,সুকন্যা শিক্ষিতা। তিনি যে দাবি করছেন যে কোনও বিষয় না জেনে সই করেছেন তা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
যদিও সুকন্যা মণ্ডলের আইনজীবীর পালটা সওয়াল ছিল,গোরু পাচারকাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএসএফ আধিকারিক সতীশ কুমার। ধৃতের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ১২ কোটি টাকার হদিশ পাওয়া গেলেও কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি? এমনকী সিবিআই-এর চার্জশিটেও নাম রয়েছে সতীশের কিছু আত্মীয়র। সেক্ষেত্রে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে বলেই সুকন্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁর আইনজীবী। যদিও আদালত শেষ পর্যন্ত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।