অসংখ্য কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই অভিনয় জগত থেকে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন বর্ষীয়ান অভিনেতা উদয় শংকর পাল। রেখে গেলেন ভূতের ভবিষ্যতে ‘আত্মারাম’ থেকে ভূতপরীর দুনিয়ার ‘বানোয়ারি’-কে। অভিনয় জগতের সঙ্গে ছিল তাঁর নিবিড় বন্ধন। নাটকের মঞ্চেই হোক বা সিনেমার পর্দায়, যেখানে যেমন চরিত্র পেয়েছেন মন দিয়ে শুধু অভিনয়টা করে গেছেন। কাজ করেছেন ‘রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য’, ‘আশ্চর্য প্রদীপ’, ‘প্রফেসর শঙ্কু ও এল ডোরাডো’-র মতো একাধিক ছবিতে। অভিনয়ের নেশায় বিয়ে-সংসার কিছুই করেননি উদয় বাবু। জীবনের লড়াইয়ে একাই লড়ছিলেন। সোমবার সেই সব লড়াই শেষ হল।
উদয়বাবুর মৃত্যুতে শোকাহত পরিচালক অভিজিৎ পাল। উদয়বাবু সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘উদয়দা যাওয়ার আগে বলেছিল তোর কাজ আর অনিকের ডাবিংটা বাকি আছে, আগে ওগুলো করবো। তারপর রেস্ট নেবো। আমি বড্ড একা হয়ে গেলাম।’ অভিজিৎবাবুই প্রথম অভিনেতার অসুস্থতার খবর জানিয়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চিকিৎসার বিপুল খরচ বহন করার ক্ষমতা ছিল না অকৃতদার উদয়বাবুর। তাই চিকিৎসার বিষয়ে গিল্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অভিজিৎ। আর্টিস্ট ফোরাম, বিশেষ করে পরিচালক অনীক দত্ত, অভিনেতা দেবদূত ঘোষ, শৈবাল মিত্র, সুমিত সমাদ্দারদের সহযোগিতায় বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বর্ষীয়ান অভিনেতাকে। সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন অভিনেতা উদয় শংকর পাল। এরপর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান অভিনেতা।
অভিনেতার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন পরিচালক অনীক দত্ত। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে অভিনেতা লেখেন, ‘আমার প্রথম ছবি থেকে শুরু করে আমার শেষ, সব ছবিতেই উদয়বাবু ছিলেন। আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধে হেরে গেলেন।’
উল্লেখ্য, পরিচালক অনীক দত্ত ও অভিজিৎ পালের আগামী ছবিতে কাজ করছিলেন অভিনেতা উদয় শংকর পাল। কিন্তু সেই কাজ তিনি শেষ করে যেতে পারলেন না। একান্ত কথোপথনে অনীক দত্ত জানিয়েছেন, ‘খুবই ভালো মানুষ ছিলেন উদয়বাবু। মিশুকে, নতুন কোনও কাজ শুরু হলেই আমাকে বলতো- আমাকে রাখছ তো? আমিও চেষ্টা করতাম চরিত্র দেওয়ার। ছোট চরিত্র হলেও অভিনয়টা খুব ভালো করত। ভালো শিল্পী। আমার শেষ ছবিতেও কাজ করেছে, এখনও ডাবিং হয়নি। অভিনয় জগতের ক্ষতি হল।’