নব-প্রযুক্তির কাঁকড়া চাষে নজর কাড়ছেন নন্দীগ্রামের অতসী 

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের চর-কেন্দেমারি গ্রামের তপশিলিজাতিভুক্ত গৃহবধূ অতসী মাইতি তাঁর বাড়ির পুকুরে মাছ চাষের সঙ্গে সঙ্গে পুকুরে ভাসমান বাক্সতে কাঁকড়া চাষ করছেন। আর এই কাঁকড়াই রপ্তানি করা হচ্ছে চিন, সিঙ্গাপুর, মার্কিনযুক্ত  রাষ্ট্রের মতো বিদেশি বাজারে।  এখানে একটা কথা বলতেই হয়, মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন অতসী। অন্যান্য গৃহিনীদের মতো গৃহকর্মেও নিপুনা। সঙ্গে বাড়ির খিড়কি পুকুরে করছেন এই অভিনব কাঁকড়া চাষ।

এই কাদা কাঁকড়া চাষের  আধুনিক লাভজনক পদ্ধতির নাম ‘বক্স ক্রাব টেকনোলজি’ বা বাক্স-পদ্ধতি। এই প্রসঙ্গে অতসী বলেন, বক্স ক্রাব টেকনোলজিতে কাঁকড়ার  চাষ অত্যন্ত লাভজনক। এর পিছনে কারণও আছে অনেক। প্রথমত, একই পুকুরে মাছ চাষের সাথে সাথে ভাসমান বাক্সে কাঁকড়া চাষে লাভ দ্বিগুণ হচ্ছে। এখানে অতসী মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর এক প্রকল্পের কথাও। সম্প্রতি দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে ‘মৎস্যজীবী নিবন্ধীকরণ’ প্রকল্পে নামও লিখিয়েছেন অতসী। এরই পাশাাপাশি ব্লক মৎস্য দপ্তরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেও চলেন। সঙ্গে এও জানান, ব্লকের মৎস্য আধিকারিকের সবসময় সহায়তা তিনি পান। ফলে এই ব্যবস্য়ায় কোনও সমস্যা তেমন ভাবে মুখোমুখি হতে হচ্ছে না তাঁকে। এদিকে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের মৎস্যচাষ সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু জানান, ‘অতসী মাইতি এক অন্যন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন যা অন্যন্য গৃহবধূদেরও উৎসাহিত করবে।  অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করার পাশাপাশি বিকল্প উপার্জনের পথ দেখাচ্ছে বাক্স পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষ। প্রতিটি বাক্সে একটি করে কাঁকড়া থাকায় একে অপরকে আক্রমণ করতে পারে না। অপরিপক্ক ডিম্বাশয়যুক্ত সুস্থ সবল সকল দাঁড়া যুক্ত স্ত্রী কাঁকড়া প্রতিটি বাক্সে মজুদ করে  পরিপক্ক ডিম্বাশয় কাঁকড়ায় পরিণত করে বাজারজাত করা হয়।  অত্যাধুনিক এই পদ্ধতি অনুসরণ করে কাঁকড়া চাষিরাও লাভের মুখ দেখছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 9 =