বাজাজ ফাইন্যান্স লিমিটেডের উদ্যোগে সাইবার সুরক্ষা সচেতনতা কর্মসূচি — ‘নকআউট ডিজিটাল ফ্রড’

ভারতের বেসরকারি খাতে সর্ববৃহৎ নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাজাজ ফিনান্স লিমিটেড (বিএফএল), যা বাজাজ ফিনসার্ভ-এর একটি অংশ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে ‘নকআউট ডিজিটাল ফ্রড’ নামে একটি সাইবার জালিয়াতি সচেতনতা কর্মসূচির আয়োজন করে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল ডিজিটাল ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ধরনের অনলাইন প্রতারণা সম্পর্কে অবহিত করা এবং আর্থিক নিরাপত্তা বজায় রাখার সর্বোত্তম পদ্ধতিগুলি সম্পর্কে সচেতন করা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে আয়োজিত এই সচেতনতা অভিযানটি বাজাজ ফিনান্সের ১০০টি শহর জুড়ে চলা সাইবার নিরাপত্তা কর্মসূচির একটি অংশ, যা নাগরিকদের বিভিন্ন ধরনের সাইবার হুমকি এবং প্রতারকদের হাত থেকে আর্থিক সুরক্ষার উপায়গুলি সম্পর্কে অবহিত করবে।

‘নকআউট ডিজিটাল ফ্রড’ কর্মসূচিটি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ২০২৪ সালের এনবিএফসি-র জন্য নির্ধারিত ফ্রড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে প্রাথমিক স্তরে জালিয়াতি শনাক্তকরণ, কর্মীদের দায়বদ্ধতা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ডিজিটাল পরিকাঠামোকে সকলের জন্য আরও সুরক্ষিত করে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হল এমন কিছু আর্থিক জালিয়াতির বিষয়ে সাধারণ নাগরিকদের সচেতন করা যা প্রতারকরা করে থাকেন, যেমন ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভুয়ো ওয়েবসাইট, যেখানে তারা অসত্য ভাবে ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার দাবি করে এবং তাদের কর্মচারীদের ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রতারণা চালায়।

বারুইপুরে বাজাজ ফাইন্যান্স লিমিটেডের ফ্রড অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে বারুইপুর সাইবার থানার ইনস্পেক্টর-ইন-চার্জ, প্রগতি রঞ্জন বিশ্বাস এই প্রসঙ্গে দেন এক সতর্কবার্তা। যেখানে তিনি বলেন,  ‘প্রতারকরা প্রায়ই সচেতনতার অভাবকে কাজে লাগায়—বিশেষ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত, সচ্ছল এবং শিক্ষিত ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে—মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বা ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর মতো ভিত্তিহীন হুমকি দিয়ে প্রলুব্ধ করে। তারা পুলিশ বা অন্যান্য আধিকারিকের ছদ্মবেশে, ইউনিফর্ম পরে, দাবি করতে পারে যে টার্গেট ব্যক্তির পার্সেলে মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে, অথবা তার এটিএম ব্লক হয়ে গেছে—এইভাবে তাকে সংবেদনশীল আর্থিক তথ্য প্রকাশ করতে বা ক্ষতিকর লিঙ্কে ক্লিক করতে বাধ্য করে।’ এই প্রসঙ্গে তাঁর পরামর্শ, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করছি, সতর্ক থাকুন, লোভের ফাঁদে পা দেবেন না, সন্দেহজনক কার্যকলাপ নিকটস্থ থানায় রিপোর্ট করুন এবং কখনোই অপরিচিত বা অননুমোদিত ব্যক্তির সঙ্গে ওটিপি বা ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। সতর্ক থাকুন, নিরাপদ থাকুন।’

এই উপলক্ষে বাজাজ ফিনান্স লিমিটেড (বিএফএল)-এর এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের কাছে গ্রাহকদের আর্থিক নিরাপত্তা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা নিয়মিতভাবে অনলাইন এবং অফলাইন মাধ্যমে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং সরাসরি নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সতর্কতামূলক বার্তা প্রচার করছি, যাতে সবাই সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন হন।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তি ও গণ্যমান্যদের মধ্যে ছিলেন অলোক কুমার বিসই, সাব-ইনস্পেক্টর এবং বিবেক ভগত, এসএসপি, বারুইপুর সাইবার পুলিশ স্টেশন। অবসরপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ, সুজিত কুমার সরকারও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

নকআউট ডিজিটাল ফ্রডসাইবার জগতের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা পরামর্শ প্রদান করে, যাতে ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল তথ্য সুরক্ষিত রাখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে ওটিপি, পিন শেয়ার না করা, সন্দেহজনক ইমেল, এসএমএস, লিংক, কিউআর কোডে ক্লিক না করা এবং অজানা উৎস থেকে অ্যাপ ডাউনলোড না করার পরামর্শ। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিভিন্ন শহর ও নগরে একাধিক ইন্টারঅ্যাকটিভ ওয়ার্কশপ, ডিজিটাল সচেতনতা প্রচার এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক আউটরিচ প্রোগ্রাম আয়োজন করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 3 =