মহিলা প্রিসাইডিং অফিসারের সামনেই ভোট বাক্স লুঠ বীরভূমে

চোখের সামনে সব ব্যালটবাক্সগুলো নিয়ে চলে গেল। চাকরি যায় যাক, এখানে আর এক মুহূর্ত নয়,’ কান্না জড়ানো গলায় এই কথাগুলি বলছিলেন বীরভূমের ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েতের রাজচন্দ্রপুর গ্রামের ১৪৭ নং বুথে প্রিসাইডিং অফিসার রঙ্গনা সেন। চোখের সামনে ভোট ‘লুঠ’, ভয়াবহ সেই ঘটনায় যেন একটা ট্রমার মধ্যে রয়েছেন রঙ্গনা দেবী।

৮ জুলাই গণতন্ত্রের সবথেকে বড় উৎসব পশ্চিমবঙ্গে। সকাল সাতটা বাজতেই শুরু হয় পঞ্চায়েত ভোট। কিন্তু, বেলা গড়াতে গড়াতেই বদলে যায় পরিস্থিতি। রক্তপাত, বোমাবাজি, মারপিঠ-এর ছবিই উঠে আসতে থাকে।

ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েতের রাজচন্দ্রপুর গ্রামের ১৪৭ নং বুথে প্রিসাইডিং অফিসারের ভার সামলাচ্ছিলেন রঙ্গনা। কিন্তু, বেলা ১১টা নাগাদ তাঁর চোখের সামনে মুখে সাদা কাপড় বেঁধে লুঠ হয়ে যায় ভোট, এমনটাই দাবি করেছেন রঙ্গনা।

এই প্রিসাইডিং অফিসারের কথায়, ‘১১টার মধ্যে ভোট হয়ে এসেছিল। মেসেজটা করার ঠিক আগে অনেকে বুথে ঢুকল। সকলের মুখ বাঁধা। হাতে লাঠি ছিল। সব ব্যালট নিয়ে গেল। কান্না জড়ানো গলায় বলেন, ‘আমার সামনে ব্যালট চুরি হয়ে গেল। ঘরের মধ্যে সেভাবে নেটওয়ার্কও নেই। পুলিশকে ফোনও করতে পারিনি এত দ্রুত সব ঘটে গেল। এখন বিডিওকে সব জানিয়েছি। বলা হয়েছে, ফোর্স আসছে।’

এই ভোটকেন্দ্রের অপর ভোটকর্মী আনন্দা চৌধুরী জানান, ‘ সকাল ৭টা থেকে ভোট শুরু করেছি। সকালে ভালোভাবেই ভোট শুরু হয়েছিল। এরপর কয়েকজন লোক মুখে কালো সাদা কাপড় বেঁধে বুথে প্রবেশ করে। আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়েই ওরা ঢুকেছিল। ব্যালটবাক্স ফেলে দেয়। কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিলেন না। আতঙ্কে রয়েছি।’

তিনি আরও জানান, এক মুহূর্ত সেখানে থাকতে চান না তাঁরা। বীরভূমের পাশাপাশি একই দৃশ্য দেখা গেল গড়বেতাতেও। গরবেতার কাষ্ঠকুড়াতে ভোট চলছিল। অভিযোগ, সেই সময় বিজেপির লোকজন এসে হামলা করে তৃণমূলের উপর। উভয়পক্ষ লাঠি নিয়ে ভোটকেন্দ্রে ঢুকে পড়ে । ব্যালটবাক্স বাইরে বের করে নিয়ে আসা হয় এই ঘটনায় পোলিং অফিসাররা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে লুকিয়ে পড়েন। নতুন করে ভোট শুরু হলেও তাঁরা আর ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন না, এমনটাই মন্তব্য শোনা গেল তাঁদের কণ্ঠে। সম্পূর্ণ ঘটনায় আতঙ্কিত তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 + eleven =