বেঙ্গালুরুর ‘বিরাট’-স্বপ্ন ভঙ্গ

বিরাটের কেরিয়ারে নানা প্রাপ্তির মাঝেও অধরা আইপিএল ট্রফি। টানা আধডজন ম্যাচ জিতে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছিল আরসিবি। পুরো টুর্নামেন্টেই দুর্দান্ত খেলেছেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ট্রফির ম্যাচের আগেই থামতে হল। এলিমিনেটরে রাজস্থান রয়্যালসের কাছে হারে এ বারের মতো বিদায়। ১৮ নম্বর জার্সির অপেক্ষা বাড়ল। হতাশায় উইকেট থেকে বেল সরিয়ে বেল সরালেন বিরাট। ঠিক একই ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছিল বিশ্বকাপে টানা দশ ম্যাচ জিতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারার পর। তবে মানতেই হবে শেষ পর্যন্ত স্নায়ুর চাপ সামলে কোয়ালিফায়ারের যোগ্যতা অর্জন করল রাজস্থান রয়্যালস। এবার প্রতিপক্ষ  সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

এদিন টসে জিতে বেঙ্গালুরুকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান  রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। পাওয়ার প্লে-র প্রথম তিন ওভার বেশ ভালোই বল করে রাজস্থান। নজর কাড়েন ট্রেন্ট বোল্ট। তবে চতুর্থ ওভার থেকে ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরেন দুই ওপেনার  কোহলি ও ডুপ্লেসির। প্লে-র শেষ ওভারে ডুপ্লেসিকে প্য়াভিলিয়নে ফেরান সেই বোল্টই।

কোহলি অবশ্য ভালোই খেলছিলেন। কিন্তু জায়গা না পেয়ে যখন যুজবেন্দ্র চহালের বলে ছক্কা মারতে যান, তখনই আউট হন। তৃতীয় উইকেটে জুটি বাঁধেন ক্যামেরন গ্রিন ও রজত পাটীদার। তাঁদের ব্যাটে ভর করেই একশোর কাছাকাছি রান ফেলে বেঙ্গালুরু। এরপর পর পর দু’বলে  গ্রিন ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে আউট করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এবার দলের হাল ধরেন পাটীদার ও মহীপাল লোমরোর। শেষপর্যন্ত বেঙ্গালুরুর ইনিংস শেষ হয়  ১৭২ রানে।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ২ ওভারে রান করতে পারেনি রাজস্থান।  তৃতীয় ওভারে বাউন্ডারি পান  যশস্বী। পরের ওভারে সিরাজও রান দেন। এরপর রানের গতি বাড়ে রাজস্থানের। মাঝে কোহলিদের খেলায় ফিরিয়েছিলেন লকি ফার্গুসন। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে তাঁর ইয়র্কারে বোল্ড হন ক্যাডমোর। ২০ রান করেন তিনি।

তবে রাজস্থানের এ মরসুমে চিন্তা ছিল লোয়ার অর্ডার। ৪ উইকেট পড়ায় ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামানো হয় শিমরন হেটমায়ারকে। ৭ ইনিংসে মাত্র ৪৫ ডেলিভারি খেলেছিলেন। রিয়ান পরাগের সঙ্গে দায়িত্ব পড়ে সেই হেটমায়ারের উপরই। শেষ ২৪ বলে রাজস্থানের টার্গেট দাঁড়ায় ৩০ রান। রাজস্থানকে চেন্নাইয়ের টিকিট দেওয়ার মরিয়া চেষ্টায় দেখা যায় রিয়ান পরাগকে। হেটমায়ারও ফোর্থ গিয়ারে ব্যাট করছিলেন। ১৭তম ওভারে ১১ রান আসে। শেষ ১৮ বলে ১৯ রান, বড় কোনও টার্গেট বলা যায় না। আরসিবির প্রয়োজন ছিল মিরাকল।

বড় ম্যাচের চাপ সামলানো সহজ নয়। বল আর রান প্রায় সমান। কিন্তু স্নায়ুর চাপ ধরে রাখাটাই আসল। বোলিং-ব্যাটিং দু-ক্ষেত্রেই তাই। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে রিয়ান পরাগকে বোল্ড করেন সিরাজ। ফের একবার ম্যাচে ফেরে আরসিবি। ওভারের শেষ বলে হেটমায়ারের উইকেট। অনবদ্য ক্যাচ ডুপ্লেসির। স্নায়ুর চাপ এবং মিরাকল। যে ভাবে বর্ণনা করা যায়। শেষ ২ ওভারে ১৩ রান। রোভম্যান পাওয়েল-অশ্বিন জুটির হাতেই ছিল রাজস্থানের ভাগ্য। ১৯ ওভারে লকি ফার্গুসনকে বাউন্ডারি মেরে স্বাগত জানান পাওয়েল। পরের বলেও বাউন্ডারি। ১০ বলে ৫ রান! আরসিবির স্বপ্ন ভাঙার পথে। ওভারের শেষ বলে ৬ মেরে ম্যাচ ফিনিশ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 3 =