আরও জটিল হচ্ছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। রবিবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। বাংলাদেশের শাসকদল আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান আন্দোলনকারীরা। ফের হিংসার আগুনে জ্বলছে বাংলাদেশ। অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কোটা বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত প্রতিবাদীরা। এই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ ঘিরে একাধিক জায়গায় সংঘর্ষ হয়েছে। রবিবার বাংলাদেশের ১৪টি জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৪৩ জনের। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় সোমবার থেকে তিন দিন ছুটি ঘোষণা করেছে শেখ হাসিনার সরকার। রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্ফু জারি করা হয় বাংলাদেশে। বন্ধ করা হয় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা সহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর এবং উপজেলা সদরে তা বলবৎ করা থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জনসংযোগ আধিকারিক মোহাম্মদ শরিফ মাহমুদ। অন্যদিকে, আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন তারা বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলি আরাফাত।
প্রসঙ্গত, কোটা সমস্যা মিটলেও আন্দোলনের আগুন নেভেনি বাংলাদেশে। একাধিক দাবিতে নতুন করে ছাত্র আন্দোলনে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের একাধিক এলাকা। চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাড়িতে হামলা পড়ুয়াদের। চট্টগ্রামের সাংসদ মো. মহিউদ্দিনের কার্যালয়েও আগুন ধরানোর অভিযোগ পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। শনিবার কুমিল্লায় একাধিক দাবিতে পড়ুয়াদের আন্দোলনে গুলি চালানোর অভিযোগের খবর মিলেছে। ঘটনায় ৫ জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি জখম আন্তত ৫০ জন।
সূত্রে খবর, জামালপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাই, কুমিল্লা-সহ দেশের একাধিক এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গোটা ঘটনার পিছনে নিষিদ্ধ জামাত ও বিরোধী দল বিএনপির হাত দেখছে বাংলাদেশ সরকার।
সম্প্রতি কোটা আন্দোলনের জেরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। হিংসায় মৃত্যু হয় ১৯৭ জনের। আদালতের নির্দেশে মুক্তি যুদ্ধের কোটা ছেঁটে ফেলে সংরক্ষণ ৫৬ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। এরপরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। নতুন করে ৯ দফা দাবিতে শুরু হয়েছে আন্দোলন।