বাংলাদেশের ট্রেলার মুর্শিদাবাদে, জানালেন দিলীপ 

মুর্শিদাবাদের ঘটনা নিয়ে ফের তৃণমূলকে বিঁধলেন বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গোটা ঘটনায় পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে দাবি করেন তিনি। বলেন,’মমতার পুলিশ চুপচাপ দেখেছে অথবা আগেই পালিয়ে গেছে। আমাদের কাছে বারবার হিন্দুদের ফোন এসেছে। বারবার আর্জি জানানো হয়েছে, বিএসএফ পাঠান। এরপর সকালে যখন বিএসএফ ঢোকে ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে দর্শক হিসেবে দেখেছে। আমার মনে হয় এটাই ওদের স্ট্র্যাটেজি।’
একইসঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে বাংলার তুলনা টেনে দিলীপের দাবি,বাংলাদেশে যা ঘটেছে এখানে তার ট্রেলার চলছে। একই ধরনের ঘটনা বলেও দাবি করেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। বলেন,’হিন্দু বসতি এলাকা ঘিরে নিয়ে অত্যাচার। অবিকল বাংলাদেশ মডেল। এটা এক্সটেন্ডেড বাংলাদেশ হয়ে গেছে। হিন্দুদের ভয় দেখিয়ে এলাকা খালি করে দাও যাতে আগামীদিনে কোনও হিন্দু ভোট না দিতে পারে।’
এদিকে বুধবার ইমাম, মোয়াজ্জেমদের সঙ্গে বুধবার ইদ পরবর্তী বৈঠক ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই প্রসঙ্গেও কটাক্ষ করেন দিলীপ। বলেন, ‘পিঠ চাপড়ে সাবাশি দেওয়ার জন্য বৈঠকে ডেকেছেন। সবটাই মমতার ইচ্ছায় এবং উৎসাহে হচ্ছে। উনি ইদের দিন বার্তা দিয়ে দিয়েছিলেন যা খুশি করো আমি দেখে নেব। মালদহ জেলার পল্লালপুরে স্কুলে এতগুলো লোক আশ্রয় নিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও লোক তাঁদের কথা শুনতে গেছেন? একই রাজ্যের একটি জায়গা থেকে লোক পালিয়ে আরেকটি জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আর মমতা মুসলিমদের ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য ডেকেছেন। শরবত খাওয়ানো হবে। উনি বলবেন ঠিক আছে। চালিয়ে যাও। মমতার যদি এটাই ইচ্ছে হয় তাহলে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের ভাবতে হবে তাঁরা কীভাবে বাঁচবেন।’
এরই রেশ টেনে দিলীপ ঘোষ এও জানান, রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে যোগী আদিত্যনাথের মতো কাউকে চাই। সঙ্গে এও বলেন,’মানুষ নিরুপায় হয়ে এরকম অনেক কিছু বলে। আমরা স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে বাস করি। দেশে একটা সংবিধান আছে। সেটা কেউ মানে। কেউ মানে না। যা পরিবর্তন হবে সেটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় করতে হবে। যোগী আদিত্যনাথ আকাশ থেকে পড়েন নি। উত্তর প্রদেশের মানুষের মনে হয়েছে শক্ত প্রশাসক দরকার। ওখানে একসময় যারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল তারা এখন এনকাউন্টারের শিকার। বাংলার সমাজ এখন বুঝতে পেরেছে। প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে ঠিক করতে হবে এটা বাংলাদেশের মতো হবে নাকি ভারতের সংবিধান অনুযায়ী চলবে। নেতা লড়াই করতে করতে উঠে আসবে। মানুষ নেতা ঠিক করবে।’
মালদহের স্কুলে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ প্রসঙ্গে দিলীপ জানান, সেখানে হাজার লোক ঘরছাড়া। সত্যি ঘটনা কী সেটা জানতে হলে সেইসব মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। মিডিয়াকে আটকানো হচ্ছে মানে মিডিয়ার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। পীড়িতদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। তার মানে সত্যি লুকোনোর চেষ্টা চলছে। সরকার বলছে ফিরে যাও। তাঁরা বলছেন ফিরবেন না। মানে তাঁদের কোনও সুরক্ষা নেই। পুলিশের ওপর ভরসা নেই। বিএসএফ এর কাজ সীমান্তকে সুরক্ষিত রাখা। যেহেতু তাঁদের ৫০ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়া হয়েছে তাই তাঁরা এসে বাঁচিয়েছেন। নাহলে আরও বেশি লোক উদ্বাস্তু হত বলে মনে করেন তিনি।
ধুলিয়ানের ভাইরাল সিসিটিভি ফুটেজ নিয়েও এদিন তিনি জানান, হঠাৎ করে হাজার হাজার লোক আসতে পারে না। পুলিশের কাছে খবর হয়তো ছিল। আসলে কেউ জানতে চায় না আসলে কী হয়েছে। দিলীপ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী চোখ দেখে মাওবাদী চিনতে পারেন,পার্টির মধ্যে কে খাচ্ছে ঘুমাচ্ছে জানতে পারেন। আর রাজ্যে এতবড় ঘটনার খবর নেই? সব খবর আছে। সব জেনে উনি করাচ্ছেন। তারপর বাহবা দেওয়ার জন্য নেতাদের আজ ডেকেছেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + eighteen =